ঘুমানোর সুন্নাত এবং আদব-কায়দা সমূহ


sunnah-manners-sleeping



একজন মানুষ ঘুমিয়ে যাওয়া মানে ছোট খাট মৃত্যু ঘটা। কথায় আছে ঘুম মৃত্যুর সমান, সেই মৃত্যু থেকে পুনরায় জীবিত হ‌ওয়া আল্লাহর অনেক বড় রহমত। তাই ঘুম যাওয়ার সময় আপনি নিজেকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করে দিতে হবে। কত মানুষ আছে, ভালো মানুষ ঘুমিয়েছেন, কিন্তু আর জাগ্রত হতে পারেনি মৃত্যু তার শেষ পরিণতি হয়েছে। 


তাই ঘুমানোর আগে দোয়া দরুদ পরে তাওবা ইস্তেগফার করে ঘুমানো সুন্নাত কারণ হতে পারে এটাই আপনার শেষ ঘুম। ঘুমানোর বেশ কিছু সুন্নাত এবং আদব-কায়দা রয়েছে, যেগুলো পালন করা অনেক সাওয়াবের কাজ। 


✓ এশার নামাযের পর যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চেষ্টা করা, যাতে তাহাজ্জুদের জন্য উঠা সহজ হয়। বুখারী, হাদীস নং- ৫৪৭
✓ উযু করে শয়ন করা। বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩১১
✓ শোয়ার পূর্বে বিছানা ভালভাবে ঝেড়ে নেয়া। বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩২০
✓ শয়নের পূর্বে পরিহিত কাপড় পরিবর্তন করে ঘুমের কাপড় পরিধান করা।
✓ ঘুমানোর পূর্বে উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা লাগানো। 


✓ শয়নের পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে নিম্নে বর্ণিত কাজগুলো করা 
১. দরজা বন্ধ করা
২. মশক বা পানির পাত্র এবং খাদ্য দ্রব্যের পাত্র ও অন্যান্য পাত্রসমূহ ঢেকে রাখা। যদি ঢাকার জন্য কোন বস্তু না পাওয়া যায়, তাহলে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ে তার মুখে একটি লাঠি বা ছড়ি রেখ দেয়া
৩. বাতি নিভানো। বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫৬২৩-২৪


✓ ঘুমানোর পূর্বে কিছু পরিমাণ কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা। যথা : আলহামদু শরীফ, সূরা কাফিরূন, আয়াতুল কুরসী, আমানার রসূল থেকে সূরা বাক্বারার শেষ পর্যন্ত, সূরা মুলক, আলিফ লাম মীম সিজদাহ ইত্যাদি তিলাওয়াত করা বেশি পড়া সম্ভব না হলে কমপক্ষে ছোট ২/ ৩ টি সূরা পড়ে নেয়া। তাবারানী কাবীর হাদীস নং-২১৯৫

✓ ঘুমানোর পূর্বে কয়েকবার দরূদ শরীফ পাঠ করা এবং তাসবীহে ফাতেমী অর্থাৎ ৩৩ বার সূবাহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া। বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৩১১৩


✓ সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস প্রত্যেকটা তিনবার করে পড়ে হাতে দম করে যতটুকু সম্ভব মাথা হতে পা পর্যন্ত সমস্ত শরীরে হাত মুছে দেয়া। তিনবার এরূপ করা। বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫০১৭

✓ ঘুমানোর সময় ডান কাতে কিবলামুখী হয়ে শোয়া সুন্নাত। উপুড় হয়ে শয়ন করতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ এভাবে শয়ন করাকে আল্লাহ তা‘আলা পছন্দ করেন না। বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩১৪


✓ ঘুমানোর পূর্বে তিনবার এই ইস্তিগফার পড়া 
✓ এই দু‘আটিও পড়া: বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৬৩১৪

اَللّٰهُمَّ بِاسْمِكَ اَمُوْتُ وَاَحْيَا


✓ সুযোগ হলে দুপুরে খানার পর কিছুক্ষণ কাইলূল্লাহ করা অর্থাৎ শয়ন করা। চাই ঘুম আসুক বা না আসুক। বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৯৩৯
✓ ঘুম থেকে উঠেই উভয় হাত দ্বারা মুখমণ্ডল এবং চক্ষুদ্বয়কে হালকাভাবে মর্দন করা, যাতে ঘুমের ভাব দূর হয়ে যায়। বুখারী শরীফ, হাদীস নং-১৮৩
✓ ঘুম হতে উঠার পর এই দু‘আ পড়া :

 اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ اَحْيَانَا بَعْدَ مَا اَمَاتَنَا وَ اِلَيْهِ النُّشُوْرُ.

 (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৬৩২৪)


✓ যখনই ঘুম হতে উঠা হয়, তখনই মিসওয়াক করা একটা সুন্নাত। উযু করার সময় উযুর সুন্নাত হিসেবে মিসওয়াক করা। বুখারী শরীফ, হাদীস নং-২৪৫

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীন, চৌকি, কাপড়ের বিছানা, চাটাই, চামড়ার বিছানা ইত্যাদির উপর শয়ন করেছেন বলে হাদীসে বর্ণিত আছে। বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ২০৬৯


No comments

Powered by Blogger.