এ্যান্টিবায়োটিক'এর কাজ এবং আমাদের করণীয়

antibiotics-work-and-our-responsibly



কিছু শতাব্দী আগেও অর্থাৎ ১৯৪০ সালের আগে মানুষ এ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে কিছুই জানতো না। সামান্য কাঁটা ছেড়ায়‌ ব্যাকটেরিয়া জমে মানুষ মারাও যেতো। আপনার শরীরের কোনো অংশ যদি কাঁটা যায়, সেই স্থানে ব্যাকটেরিয়া জমতে থাকে যার কারণে সে স্থান আর শুকাতে পারে না, সেখানে পচন ধরে যায়। এখানেই এ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে।


১৯৪১ সালে এ্যান্টিবায়োটিক পূর্ণাঙ্গ রুপে আবিষ্কার হ‌ওয়ার পর এটাকে তখন বলা হতো মিরাকেল ঔষধ। এ্যান্টিবায়োটিক হলো এমন একধরণের ঔষধ যা ব্যক্তির শরীরের ব্যাকটেরিয়া বা ব্যাকটেরিয়াসমূহের বিরুদ্ধে কাজ করে। এই ঔষধগুলো নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া সমূহের বা তাদের কোষের বিকাশ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে এবং সংক্রমণ বা অসুস্থতা থেকে মানুষের শরীরকে রক্ষা করে।


এ্যান্টিবায়োটিকের মূল কাজ হলো ব্যাকটেরিয়া সমূহের কোষগুলো নষ্ট করা বা তাদের কার্যক্ষমতা নষ্ট করা, যেটি তাদের জীবনপ্রক্রিয়া বা বিকাশ প্রক্রিয়ার অংশ। এই কাজের ফলে ব্যাকটেরিয়াসমূহ মারা যায় বা তাদের প্রক্রিয়া স্লো হয়ে যায়, যা তাদের বাড়তি প্রক্রিয়া ও বিকাশ নিষ্ক্রিয় করে দেয়।





মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, 
১. এ্যান্টিবায়োটিক কেবল ব্যাকটেরিয়াসমূহের বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি ভাইরাস, ফাংগাস বা অন্যান্য মাইক্রোওর্গানিজমের বিরুদ্ধে কাজ করে না।
২. এ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা উচিত নয়। 


৩. যখন‌ই এ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করবেন, তখন কোর্স সম্পূর্ণ করে খাবেন কেননা পুরো ডোজ না খেলে ব্যাকটেরিয়া থেকে যায়। 
৪. হাঁচি, কাশি, জ্বর এগুলোর জন্য এ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়া উত্তম, কেননা সাধারণ রোগের জন্য এ্যান্টিবায়োটিক খেলে ব্যাকটেরিয়া গুলো আরো শক্তিশালী হয়ে যায়, কেননা ব্যাকটেরিয়া সবসময় এ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ভালোবাসে। 


যদি আপনার শরীরের ব্যাকটেরিয়া একবার এ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে তাহলে আপনার শরীরে এ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না। তখন আপনার শরীরের ছোট খাট কাঁটা ছেড়ায় হতে পারে মারাত্মক বিপদ। তাই সাবধানতা অবলম্বন করুন।





৫. এ্যান্টিবায়োটিক কয়েক ভাবে কাজ করে থাকে, যেমন কিছু এ্যান্টিবায়োটিক সরাসরি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে দেয়, কিছু এ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, কিছু এ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়, সেগুলো আর বাড়তে না পেরে সেখানেই শেষ হয়ে যায় ইত্যাদি, তাই আপনার রোগের জন্য কোন ধরনের এ্যান্টিবায়োটিক ভালো হবে সেটা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ভালো জানেন, তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা যাবেনা। 






এ্যান্টিবায়োটিক বিভিন্ন ধরণের হতে পারে যেমন,পেনিসিলিন: এটি সর্বপ্রথম আবিস্কৃত এ্যান্টিবায়োটিক। এ ধরনের এ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া বিপ্লবের জন্য ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ এরা ব্যাকটেরিয়া প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এছাড়াও ciprofloxacin, erythromycin টেট্রাসাইক্লিন, ম্যাক্রোলাইডস, কিনোলোনস, আমিনোগ্লাইকোসাইড ইনহিবিটরস (এসই),সহ অনেক ধরনের এ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়। 




No comments

Powered by Blogger.