ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ 'শিরক'
ঈমান অপেক্ষা মূল্যবান রত্ন ধরাধামে নেই। নূন্যতম ঈমান নিয়ে পৃথিবী থেকে যেতে পারলে আপনার জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অসংখ্য বিলাসীতা আর সুখ। ঈমানদার মুসলমানের জন্য আল্লাহ যা যা অঙ্গীকার করেছেন তার সবই দেবেন। কেননা আল্লাহ সর্ব শক্তিমান।
হাদীস শরীফের বর্ণনা মতে, শেষ যুগে ঈমান রক্ষা করা কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। যেমন আগুন হাতে রেখে চলার মতো ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। আপনি ঈমানের পথে চলতে গেলে নানান মুখি বাঁধার মুখে পড়তে পারেন। কিন্তু যেভাবেই হোক, ঈমান রক্ষা করতেই হবে।
জীবন দিয়ে হলেও প্রত্যেক মু‘মিনকে তার ঈমানের হেফাযত করতেই হবে। ভয় কিংবা লোভে পড়ে ঈমান হারানো যাবে না। ঈমানটুকু চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে বাঁচার রক্ষাকবচ। তাই কুফর, শিরক বিদআত'এর মতো মারাত্মক পাপ থেকে বিরত থাকতে হবে, সচেতন হতে হবে।
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- ‘যারা সরল পথ [ইসলামের শিক্ষা] প্রকাশ পাওয়ার পর রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরুদ্ধাচরণ করবে এবং মুসলমানের তরিকা ছাড়া অন্য তরীকা অবলম্বন করবে, আমি তাদেরকে সেই পথগামীই করব এবং পরিণামে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।
জাহান্নাম ভীষণ মন্দ জায়গা। আল্লাহর সঙ্গে শরীক করার পাপ কিছুতেই আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করবেন না। এছাড়া অন্যান্য পাপ যার জন্যে যতটুকু ইচ্ছা করেন, ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহর সাথে শরীক করে, তারা মহাপাপী। শিরক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, শিরক করা মহাপাপ।
আল্লাহ তাআলা বলেন, তারা আল্লাহকে ছেড়ে স্ত্রী জাতির অর্থাৎ দেবীদের এবং খোদার অভিশপ্ত সেই পাপিষ্ঠ শয়তানেরই পূজা করছে, যে মানবজাতির সৃষ্টির লগ্নে বলেছিল- আমি মানবজাতির মধ্য হতে এক দলকে নিজের অনুসারী বানিয়ে তাদেরকে বিপথগামী করব, তাদেরকে নানা দুরাশায় আক্রান্ত করব, আর তাদেরকে গৃহপালিত পশুর কান কাটতে আদেশ করব।
আর তা-ই করবে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করতে [অর্থাৎ দাঁড়ি মুন্ডনের মতো শরী‘আত বিরোধী কাজ করতে] আদেশ করব, তারা তাই করবে। বস্তুত যারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানের আদেশ পালন করবে, তারা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শয়তান তাদের নিকট ওয়াদা করে এবং আশ্বাস বাণী শোনায়, কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে শয়তানের ওয়াদা ও আশ্বাস বাণী প্রবঞ্চনা ব্যতীত কিছুই নয়”।[সূত্র : সূরা নিসা, আয়াত ১৫-১৬।]
উপরোক্ত আয়াতগুলো দ্বারা তা স্পষ্টই বোঝা যায় শিরক, বিদ‘আত, শয়তানের কাজ , যা অত্যন্ত জঘন্য অন্যায়, নিন্দনীয় এবং ঈমানের জন্যে অনিষ্টকর। এসব কাজ করলে তাওহীদ ও রিসালাতের আক্বীদা নষ্ট হয় এবং ইমানের নূর ও রশ্মি চলে গিয়ে অন্ধকার বিস্তার লাভ করে।
প্রচলিত বদ-রেওয়াজ সমূহের মধ্যে কতগুলো সরাসরি কুফর, শিরক পর্যায়ের, আর কতগুলো কুফর ও শিরক না হলেও কিন্তু কুফর ও শিরকের কাছাকাছি, আর কতগুলো বিদ‘আত। এগুলো থেকে বিরত থাকুন, অন্যকেও সতর্ক থাকতে বলুন। এটি সকলের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
No comments