ফেরেশতাগণ'এর ওপর ঈমান এবং জিন সম্বন্ধে ইসলামের আক্বীদা
আল্লাহর একত্ববাদের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস করার নামই হলো ঈমান। ঈমানের শাখায় শাখায় ছড়িয়ে আছে আল্লাহ তাআলার অনেক সৃষ্টি। যেযন জিন আর ফেরেশতাগণের অস্তিত্ব বিশ্বাস করাও ঈমানের একটি অঙ্গ। এরাও আল্লাহর সৃষ্টি, এদের আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন। এদের বিশ্বাস আর আক্বীদা নিয়ে ইসলামের হুকুম কি? এই নিয়ে আজ আলোচনা হবে।
★ ফেরেশতাগণ'এর ওপর ঈমান
ফেরেশতাগণের ওপর ঈমান আনার অর্থ হলো এ কথা বিশ্বাস করা যে, মহান আল্লাহ এক ধরণের সৃষ্টিজীবকে নূর দ্বারা সৃষ্টি করে তাদেরকে আমাদের চক্ষুর অন্তরালে রেখেছেন। তাদেরকে ফেরেশতা বলে। তাঁরা পুরুষ বা মহিলা কোনটিই নন। বরং তাঁরা ভিন্ন ধরনের সৃষ্টিজীব।
অনেক ধরণের কাজ আল্লাহ তা‘আলা তাদের ওপর সোপর্দ করে রেখেছেন। তারা আল্লাহর নির্দেশ মতে সেই সকল কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। যেমন নবীগণের (আ.) নিকট অহী আনয়ন করা, মেঘ পরিচালনা করা, রুহু কবয করা, ভালো মন্দ আমল নামা লিখে রাখা ইত্যাদি।
তাঁরা সম্পূর্ণ নিষ্পাপ। তাঁরা বিন্দুমাত্র আল্লাহর নাফরমানী করেন না। তাঁরা আল্লাহর প্রিয় ও ফরমাবরদার বান্দা। তাঁদের মধ্যে হযরত জিবরাঈল আ. হযরত মীকাঈল আ. হযরত ইসরাফীল আ. ও হযরত আযরাঈল আ. চারজন ফেরেশতা অতিপ্রসিদ্ধ।
★ জিন সম্বন্ধে ইসলামের আক্বীদা
আরেক প্রকার জীবকে আল্লাহ তা‘আলা আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করে আমাদের চক্ষুর অগোচর করে রেখেছেন। তাদেরকে জিন বলে। তাদের মধ্যে ভালো-মন্দ সবরকম হয়। তারা নারী-পুরুষও বটে এবং তাদের সন্তানাদিও হয়। তাদের খানা-পিনার প্রয়োজনও হয়।
জিন মানুষের ওপর আছর করতে পারে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ ও বড় দুষ্ট হচ্ছে ‘ইবলিশ শয়তান’। হাশরের ময়দানে জিনদেরও হিসাব-নিকাশ হবে। এ কথা কুরআনে কারীমে উল্লেখ আছে। সুতরাং তা বিশ্বাস করা ঈমানের অংশ।তাদের অস্তিত্ব বিশ্বাস করতে হবে।
অনেক দৃশ্যমান বিষয় জিনরা অদৃশ্য থেকে অবলোকন করে তা বর্ণনা করে, যা অনেকে অদৃশ্যের খবর বলে মনে করে থাকে। এটা নিছক ভুল ধারণা। জিন অদৃশ্য সংবাদ জানে এমনটি বিশ্বাস করা যাবেনা। আসমান ও জমিনের কোনো অদৃশ্যের সংবাদ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।
অনেক নাস্তিক মনে করে জিন-পরী বলতে কিছু নেই—এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। পবিত্র কোরআনে (সুরা : হিজর, আয়াত : ২৭) মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আমি প্রজ্বলিত অগ্নিশিখা থেকে জিন সৃষ্টি করেছি।’ এ ছাড়া ‘সুরা জিন’ নামের কোরআনে পাকের একটি স্বতন্ত্র সুরার নামকরণ হয়েছে।
ছোট-বড় প্রায় ৫৭টি আয়াতে এ সম্পর্কিত বহু বিস্ময়কর তথ্য রয়েছে, যা নিশ্চিতরূপে জিনের অস্তিত্ব প্রমাণ করে। জিনদের সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য পাওয়া যাবে, যা পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে নিশ্চিতরূপে প্রমাণিত। এটি অস্বীকার করা যাবে না।
No comments