চন্দ্র মাসের হিসাব নিকাশ || ইসলামিক সভ্যতার বিকাশ

calculation-lunar-months



আল্লাহর কাছে মাসের যে হিসাব গ্রহণযোগ্য যে হিসাব আল্লাহ আসমান জমীন তৈরী করার আগেই করেছেন আর তা হলো চন্দ্র মাসের হিসাব। সৃষ্টির প্রথমেই আল্লাহ তাআলা বড় বড় কিছু মাখলুক সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। কুরআনে যে “সিত্যাতে আইয়্যাম” বলা হয়েছে তা হলো আখেরাতের ছয় দিন। ঐ ছয় দিনে চাঁদ-সূর্য সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এর আগে চাঁদ-সূর্য কিছুই সৃষ্টি হয়নি। 


তাই বুঝা যায় যে আল্লাহ কুরআনে যে ছয় দিনের কথা উল্লেখ করেছেন তা আখেরাতের ছয় দিন। অর্থাৎ এক দিন দুনিয়ার এক হাজার বছরের সমান। এরপর আবার সাত দিনে মৌলিক সৃষ্টির মধ্যে আরো কিছু বিস্তারিত মাখলুক সৃষ্টি করলেন। মুসলিম শরীফে তা উল্লেখ আছে। 


তাই এই সাতদিন মানে দুনিয়ার সাত দিন। আর সপ্তম দিনে আদম জাতির পিতা হযরত আদমকে আ. সৃষ্টি করলেন। এই সাত দিনের হিসাব থেকে চন্দ্র মাসের হিসাব শুরু হয়েছে। এই সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে আয়াত নাযিল করেছেন, অর্থাৎ "নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট মাসের গণনা বারোটা। 


এই বারো মাস বলতে চান্দ্র মাসের কথা বলা হয়েছে। তাই চান্দ্র মাসের হিসাব রাখা ফরজে কিফায়া। সৌর বছরের কথা বলা হয়নি। সৌর বছরতো দুনিয়া যতদিন আছে ততোদিন। মু‘মিন তার সকল কাজ চান্দ্র মাসের হিসাব অনুযায়ী করে। ইসলাম ধর্ম যে সত্য ধর্ম এবং লেটেষ্ট ধর্ম এই মাসও তার একটা দলিল। সৌর বছর (অর্থাৎ ৩৬৫ দিনে বছর) মৃত কেননা এর কোন পরিবর্তন হয় না। সারা জীবন একই থাকবে। কিন্তু চান্দ্র বছর জীবিত, নড়াছড়া করে। 


কখনো ২৯ দিনে মাস আবার কখনো ৩০ দিনে। আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না কত দিনে মাস হবে। এমনকি এই চান্দ্র মাসের হিসেবেই মু‘মিন তার সমস্ত ইবাদত করে থাকে। আশুরা, শবে-বারা‘আত, শবে-ক্বদর, ঈদ, হজ্জ, কুরবানী সবকিছুই চান্দ্র মাসের হিসাব অনুযায়ী হয়। 


আরাফাতও সারা বছর পরে আছে কিন্তু এর বিশেষ কোন ফজিলত নাই। যিলহজ্জ মাসের নয় তারিখ এর মূল্য বেড়ে যায়। আরবী বছর বা চান্দ্র বছরের আরো একটি বড় ফজিলত হলো আল্লাহর মেহেরবানীতে আরবী বছর নিয়ে কেউ নষ্টামি করেনি। ইনশাআল্লাহ কখনো হবে না। আল্লাহ হেফাজত করেছেন। 


শরীয়তে বর্ষবরণ বলে কোন আমল নেই। বরং গুনাহ, হারাম। অথচ বাংলা বছর বা ইংরেজী বছর অথবা চায়না নব বর্ষ নিয়ে অনেক নষ্টামি করে থাকে। জরীপে এসেছে দুনিয়াতে একদিনে সবচেয়ে বেশী মদপান করে থাকে ইংরেজী বছরের শুরুর দিনে। এগুলো অনেক বড় পাপের কাজ। 


তবে হ্যাঁ মনে রাখতে হবে মুসলমানের বা ইসলামের শত্রু সর্বস্থরে ছড়িয়ে আছে। ইসলামকে ধ্বংস করাই তাদের একমাত্র কাজ। আর এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য তারা মুসলমানের নাম, পোশাক আকৃতি ধারণকরে করে থাকে। সত্যিকার অর্থে এরা ইহুদী খৃষ্টানদের এজেন্ট। ওদের টাকায় লালিত-পালিত হচ্ছে। 


সুতরাং কেউ যদি আরবী বছরের বর্ষবরণের উদ্দেশ্যে বছরের প্রথম দিনেওয়াজ মাহফিল, কুরআন তিলাওয়াতের মজমা বা অন্য কোন ইবাদত করে তবে তাও গুনাহের কাজ হিসেবেই গণ্য হবে। 


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়্যাত পাওয়ার পর দীর্ঘ তেইশ বছর দুনিয়াতে ছিলেন কিন্তু কখনো বর্ষবরণ উপলক্ষে কোন আমল বা কোন বিশেষ মজমা করেননি, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের পর সাহাবা রা. একশ বছর দুনিয়াতে ছিলেন কিন্তু তাঁরাও কখনো বর্ষবরণ উপলক্ষে কোন আমল বা কোন বিশেষ মজমা করেননি। কুরআন হাদীস দ্বারা এর কোন প্রমাণ নেই।


No comments

Powered by Blogger.