বিপদকালীন দু‘আ এবং নবীজির আমল




বিপদে ধৈর্য ধারণ করা অনেক বড় ঈমানের কাজ। আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিপদ আপদ দিয়ে ধৈর্যের পরীক্ষা নেন। বিপদ আপদ এলে অস্থির না হয়ে ধৈর্যের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। আমরা অনেকেই বিপদ আপদ এলে হায়হুতাশ শুরু করে দিই, এটি মোটেও কাম্য নয়। 


বিপদ আপদে রয়েছে নবীজির শিক্ষা এবং আমল। বিভিন্ন হাদীসে বিপদে পড়লে কি দোয়া পড়তে,কি আমল করতে হয় তাঁর বর্ণণা এসেছে। আজ সেই বিষয়ে কিছু হাদীস তুলে ধরা হলো। 

★ عن ابن عباس : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم كان يقول عند الكرب ( لا إله إلا الله العظيم الحليم لا إله إلا الله رب العرش العظيم لا إله إلا الله رب السماوات ورب الأرض ورب العرش الكريم ) أخرجه البخارى فى صحيحه الحديث 


নবী করীম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপদকালে বলতেন, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই যিনি সুমহান, সহনশীল। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, যিনি আসমানসমূহ, যমীন এবং আরশে আযীমের রব। (বুখারী হাঃ নং ৬৩৪৫)

★ عن ابى بكرة اللهم رحمتك أرجو فلا تكلني إلى نفسي طرفه عين ، وأصلح لى شأني كله لا إله إلا أنت. اخرجه ابوداود فى سننه الحديث

অর্থঃ হযরত আবূ বাকার রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিপদগ্রস্তের দু‘আ এই- “আল্লাহ! আমি তোমার দয়া কামনা করি। তুমি আমাকে মুহূর্তের জন্যও আমার হাতে ছেড়ে দিও না। বরং তুমি স্বয়ং আমার সমস্ত ব্যাপার ঠিক করে দাও। তুমি ছাড়া কোন মাবুদ নেই।” (মিশকাত ২৪৪৭)



★ عن انس رضـ ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان اذا كربه امر يقول: حي ياقيوم برحمتك استغيث. مشكاة المصابيح الحديث 

হযরত আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যখন কোন বিষয় চিন্তাগ্রস্ত করতো, তিনি বলতেন, “হে চিরঞ্জীব! হে স্বপ্রতিষ্ঠ -সংরক্ষণকারী! তোমার দয়ার নিকট আমি ফরিয়াদ করি।” (মিশকাত-২৪৫৩)

عَنْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- ذَاتَ يَوْم الْمَسْجِدَ فَإِذَا هُوَ بِرَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ أَبُو أُمَامَةَ فَقَالَ « يَا أَبَا أُمَامَةَ مَا لِى أَرَاكَ جَالِسًا فِى الْمَسْجِدِ فِى غَيْرِ وَقْتِ الصَّلاَةِ ». قَالَ هُمُومٌ لَزِمَتْنِى وَدُيُونٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ « أَفَلاَ أُعَلِّمُكَ كَلاَمًا إِذَا أَنْتَ قُلْتَهُ أَذْهَبَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَمَّكَ وَقَضَى عَنْكَ دَيْنَكَ ». قَالَ قُلْتُ بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ « قُلْ إِذَا أَصْبَحْتَ وَإِذَا أَمْسَيْتَ اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ ». قَالَ فَفَعَلْتُ ذَلِكَ فَأَذْهَبَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَمِّى وَقَضَى عَنِّى دَيْنِى. أخرجه ابوداود الحديث

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রা. বলেন, এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে চিন্তায় ধরেছে এবং ঋণ আমার ঘাড়ে চেপে বসেছে। তিনি বললেন আমি কি তোমাকে এমন একটি বাক্য বলব না, যদি তুমি বল, তবে আল্লাহ তোমার চিন্তা দূর করে দিবেন এবং তোমার ঋণ পরিশোধ করে দিবেন।


সাহাবী বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ ইয়া রাসূলুল্লাহ, বলুন! তখন তিনি বললেন, যখন তুমি সকালে উঠবে এবং যখন তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হবে, বলবে, “আল্লাহ! আমি তোমার নিকট চিন্তা-ভাবনা হতে পানাহ চাই। অপারগতা ও অলসতা হতে পানাহ চাই এবং আমি কাপুরুষতা ও কৃপণতা হতে পানাহ চাই। 


এবং আমি ঋণের বোঝা ও মানুষের অত্যাচার হতে পানাহ চাই।” তিনি বলেন, অতঃপর আমি তা করলাম, আর আল্লাহ আমার চিন্তা দূর করে দিলেন এবং আমার ঋণ পরিশোধ করার ব্যবস্থা করে দিলেন। (আবু দাউদ, মিশকাত-২৪৪৮)


উপরোক্ত হাদীস সমূহ থেকে বোঝা যায়, বিপদ আপদ এলে কি আমল করতে হবে এবং কি দোয়া করতে হবে। আল্লাহ সব সময় মোমিন বান্দার পাশেই আছেন। কিন্তু মোমিন বান্দা আল্লাহকে কতটুকু ভালোবাসেন, তাও তো দেখা দরকার। 

No comments

Powered by Blogger.