রমজান মাস শুধুই ইবাদতের মাস || রমজান মাস শুধুই আত্মশুদ্ধির মাস

month-ramadan-only-month-worship-month-ramadan-only-month-self-purification



Ramadan Kareem || 
হযরত ইসহাক বিন ইবরাহিম হুনাইনি রমজান মাস এলে হাদিসের মজলিসে বসতেন না। তখন তাকে মালিক বিন আনাস (রহ.) জিজ্ঞাসা করেন, হে আবু ইয়াকুব, তুমি রমজানে হাদিস শোনা ছেড়ে দাও কেন? রমজানে তা অপছন্দের হলে অন্য সময়েও তা অপছন্দনীয় হওয়ার কথা। তখন তিনি বলেন, হে আবু আবদুল্লাহ, এটি বরকতপূর্ণ মাস। এ সময় আমি নিজের জন্য সব কিছু থেকে অবসর নিতে চাই।



✓ রমজান মাসে কোরআন তিলাওয়াতের 
কথা হাদীসে বেশি এসেছে, 
রমজান মাস শুরু হলে সুফিয়ান সাওরি (রহ.) সব ইবাদত ছেড়ে শুধু কোরআন তিলাওয়াত করতেন। আবু উসমান সাইদ বিন মানসুর আল-জুজাজানি (মৃত্যু ২২৭ হি.) তাঁর ‘আত তাফসির মিন সুনানি সাইদ বিন মানসুর’ গ্রন্থে লিখেছেন, প্রখ্যাত তাবেঈন আল-আসওয়াদ বিন ইয়াজিদ আন-নাখয়ি (রহ.) রমজানের প্রতি দুই রাতে একবার পবিত্র কোরআন খতম করতেন। তিনি মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে ঘুমাতেন।



✓ রমজান মাসে ওমরাহ পালনে বেশি সওয়াবের 
কথা বর্ণিত হয়েছে হাদীসে ,
রমজান মাসে ওমরাহ পালনের দীর্ঘ ঐতিহ্য এবং ইতিহাস রয়েছে। ‘আখবারু মক্কা’ গ্রন্থে আবদুল্লাহ বিন খুসাইম (মৃত্যু ১৩২ হি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি আতা বিন রাবাহ (রহ.), মুজাহিদ বিন জাবারত (রহ.) ও আবদুল্লাহ বিন কাসির আদদারি (রহ.)-সহ অনেক ফকিহকে দেখেছি। 

তারা রমজানের ২৭তম রাতে তানয়িমের উদ্দেশ্যে বের হতেন এবং ওমরাহ পালন করতেন। যেভাবে আয়েশা (রা.) ওমরাহ পালন করেছেন। প্রখ্যাত ফকিহ মুহাম্মদ আল-বানদানিজি শাফেয়ি (মৃত্যু ৪৯৫ হি.) রমজান মাসে ৩০টি ওমরাহ পালন করতেন।




✓ ইমাম আবু ওমর বিন আল আলা তামিমি রমজান শুরুর পর আর কোনো কবিতা আবৃত্তি করতেন না,
ইবনে কাসির (মৃত্যু ৭৭৪ হি.) তাঁর ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে লিখেছেন, ভাষাবিদ ইমাম আবু ওমর বিন আল আলা তামিমি রমজান শুরুর পর আর কোনো কবিতা আবৃত্তি করতেন না। আল-ওয়াফি বিল ওয়াফায়াত গ্রন্থে বলা হয়েছে, মুহাম্মাদ ইবনুল আদিম আল হানাফি রমজান মাসে ইতিকাফ করতেন। এই সময় তিনি পবিত্র কোরআনের একটি বা দুটি মাসহাফ লেখা সম্পন্ন করতেন।



✓ রমজান মাসে অনেক মুহাদ্দিস সীমান্ত প্রহরা ও সেনা অভিযানে অংশ নিতেন এবং সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়,
তাই প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আবদুল্লাহ বিন মোবারক (মৃত্যু ১৮১ হি.) প্রায় সময় বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে আব্বাসীয় সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধে অংশ নিতেন। ‘মাশাহিরু উলামায়িল আমসার’ গ্রন্থে বলা হয়েছে, ১৮১ হিজরির রমজান মাসে (তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয়) তারাসুস শহর থেকে ফেরার পথে তিনি মারা যান। ‘তারিখে বাগদাদ’ গ্রন্থে বলা হয়, ইরাকি মুহাদ্দিস আল-হুসাইন বিন বাহার আল-আহওয়াজি ২৬১ হিজরির রমজান মাসে (তুরস্কের) মালাতয়া অঞ্চলে মারা যান। তখন তিনি একটি সেনা অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন।



প্রখ্যাত মুহাদ্দিস সুওয়াইদ বিন আমর আল-কুফি (মৃত্যু ২০৪ হি.) রমজান মাসে হাদিস বর্ণনা করতেন না। ‘তারিখু কুজাতিল আন্দালুস’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্দালুসের বিচারক আবু বকর ইবনে জারব (মৃত্যু ৩৮১ হি.) রমজান মাসে বিচারকার্য পরিচালনা করতেন না। ওই সময় তিনি ইবাদতের জন্য পুরোপুরি নিমগ্ন থাকতেন। আমৃত্যু তিনি একই রীতি অনুসরণ করেন।





No comments

Powered by Blogger.