পুরুষদের জন্য কিছু বর্জনীয় এবং করণীয় কাজ

Some dos and don'ts for men




 আমাদের সমাজে পুরুষরাই সবচেয়ে উদাসীন। কর্তব্যে অবহেলা করেন এমন পুরুষের অভাব নেই আমাদের সমাজে। পারিবারিক জীবন, ধর্মীয় জীবন, চাকরি জীবনে অনেকেই জানেন না যে তার সঠিক করণীয় কি, তার জন্য তার পরিবার ধ্বংস হচ্ছে, তার জন্য তার সন্তানগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, শুধু মাত্র কর্তব্যে অবহেলা করার কারণে। ইসলাম কি বলছে, তাই শুনুন আজ। 


✓ সর্ব প্রথম একজন পুরুষের উচিত নিজের বৌ বাচ্চাদের দ্বীনী জরুরী শিক্ষা গুলোর ব্যবস্থা করা। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অথচ মৌলিক জ্ঞানের অভাবে তাঁর পরিবার প্রতিনিয়ত ধ্বংসের পথে পা বাড়াচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটি প্রতিটি পুরুষের ফরয দায়িত্ব, এই যেমন,,,
১. আত্মসমালোচনা না করে অপরের সমালোচন করা অনেক বড় গুনাহের কাজ। এটি মোটেও করা যাবেনা।
২. অন্যের ব্যাপারে খারাপ-ধারণা পোষণ করা গুনাহের কাজ।
৩. নিজের সন্তানকে, পরিবারের সবাইকে সালামের অভ্যাস করুন ইত্যাদি। 


✓ স্বামীর উপর স্ত্রীর যে অধিকার আছে তা অনেকেই জানেন‌ই না। অনেক পুরুষ নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে স্ত্রীর উপর দিনের পর দিন অত্যাচার করে আসছে, এটি সম্পূর্ণ ভুল, এমনটি মোটেও করা যাবেনা। 


✓ সাংসারিক কোন কাজে পরিবারের অন্য কোন সদস্যের সাথে পরামর্শ না করে মোটেও করা যাবেনা। যার কারণে পারস্পরিক অন্তঃকলহ বেড়ে যায়। স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে পরামর্শ করতে হবে, তার পর যেটা ভালো, যেটা কল্যাণ মনে হয় সেটার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। 


✓ নিজের বাবা মায়ের সেবা শুশ্রূশা করা। পিতা মাতার খাবার দাবার, চিকিৎসার খোঁজ খবর রাখা। অনেক পুরুষ মনে করেন, তার পিতা মাতার সেবা করা তার স্ত্রীর দায়িত্ব, এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা, আপনার পিতা মাতার সেবা করা আপনার দায়িত্ব। বাবা- মায়ের খেদমত ছেলের দায়িত্ব , স্ত্রীর দায়িত্ব নয়। স্ত্রীর দায়িত্ব হলো স্বামীর খেদমত করা এবং সুযোগ মত নিজ পিতা মাতার খোঁজ-খবর রাখা। (সূরা বাকারা:৮৩)


✓ কিছু পুরুষ বিবাহের পর নিজ বাবা-মা, ভাই-বোনকে পর ভাবতে শুরু করে।এমনটা করা মোটেও সঠিক নয়। কারণ বাবা-মা, ভাই-বোনের ভালবাসা স্বার্থহীন, অর্থহীন হয়ে থাকে। বাবা মা, শশুর শাশুড়িসহ সকল আত্মীয়দের প্রাপ্য যথাযথভাবে দেয়া প্রত্যেক পুরুষের কর্তব্য। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৫৯৮৬)


✓ অনেক পুরুষের ছেলে সন্তান হওয়ার ব্যাপারে বেশি আগ্রহ থাকে, পক্ষান্তরে মেয়ে হলে স্ত্রীকে দোষারোপ করতে থাকে। অথচ ছেলে বা মেয়ে হওয়া আল্লাহর ইচ্ছা, এতে স্ত্রীর কোন ইখতিয়ার নেই। সুতরাং প্রত্যেক পুরুষের উচিত ছেলে হোক, মেয়ে হোক স্ত্রীকে দোষারোপ না করা।
 

✓ অনেক পুরুষ আছেন, স্ত্রীর অন্ধভক্ত। কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়া সবক্ষেত্রেই স্ত্রীর কথাকে প্রাধান্য দিয়ে পিতা-মাতা, ভাই -বোনদের সাথে মহা ঝগড়া বাধিয়ে দেয়। আবার কিছু পুরুষ আছে, যারা পিতা মাতার কথাকে প্রাধান্য দিয়ে বৌয়ের উপর নির্যাতন করে, এগুলো কোনো সুপুরুষের কাজ নয়। উভয় দিকে লক্ষ্য রেখেই বিচক্ষণতার সাথে চলতে হবে। 



✓ মহরের টাকা পরিশোধ করা সাধারনত পুরুষরা জরুরী মনে করে না, অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী প্রথম রাত্রেই কিংবা পরে কোন অন্তরঙ্গ মুহূর্তে স্ত্রী থেকে মহর মাফ করিয়ে নেয়। এটি কোনো সুপুরুষের কাজ নয়, স্ত্রীর মহরের টাকা পরিশোধ করা প্রত্যেক পুরুষের কর্তব্য। 


✓ পুরুষেরা যখন কিছুটা বয়স্ক হয়ে যায়, কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তখন সর্বক্ষেত্রে তার কথাকেই সত্য এবং সঠিক বলে মনে করে। বাস্তবতা যাচাই না করে তার মতামত অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়, যা এক ধরনের জুলুম নির্যাতন। এই দুর্বলতা থেকে অনেক গুনী জ্ঞানীলোকেরাও মুক্ত নয়। এদের কারণে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। ছোট খাট বিষয় নিয়ে ছেলের বৌ, নাতি পুতিদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। 


✓ অনেক বদ-মেজাজী পুরুষ সামান্য কারণে স্ত্রীকে মার-পিট করে থাকে। এমনকি রাগের মাথায় তালাক দিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। এজাতীয় পুরুষরা আল্লাহর স্পষ্ট হুকুমের অমান্য কারী। 


No comments

Powered by Blogger.