নামাযের ফরয কয়টি ? জেনে নিন


how-many-obligatory-faraz-prayers


নামাযের ফরয মোট ১৩টি। এই ১৩টিকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কিছু নামাযের বাহিরে অর্থাৎ নামাযের আগে ও পরে আর কিছু ফরয নামাযের ভেতরে অর্থাৎ নামাযের মধ্যেই। এই ফরয গুলোর কোনো একটি ভঙ্গ হলেই আপনার নামায হবে না। তাই নামায পড়ার আগেই এই তেরো ফরয শতভাগ সঠিক ভাবে আছে কিনা দেখে নিন।‌‌



✓ নামাযের বাহিরে ফরয ৭টি 
১. শরীর পবিত্র হওয়া, যিনি নামায পড়বেন তাহার শরীর শরিয়তের পরিভাষায় যেমন পবিত্র হ‌ওয়ার কথা বলা হয়েছে তেমনই পবিত্র হতে হবে, অপবিত্র শরীর নামায সহ কোনো ইবাদতের জন্যই প্রযোজ্য নয়। (সূরায়ে মায়িদা:৬)


২. কাপড় পবিত্র হতে হবে। যে কাপড় পরিধান করে নামাযী নামায পড়বে সেই কাপড় সম্পূর্ণ পবিত্র হতে হবে। অন্যথায় পোশাকের সাথে সাথে তাহার শরীর‌ও অপবিত্র বলে গন্য হবে। (সূরায়ে মুদ্দাসসির:৪)


৩. নামাযের জায়গা পবিত্র হওয়া। যে জায়গায় দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা হবে, সেই জায়গায়টুকু পবিত্র হতে হবে। এর উপরে নিচে, আগে পিছে ব্যাখা বিশ্লেষণ করে অনেক মাস‌আলা মাসায়েল আছে, সবগুলো জেনে রাখাও জরুরী। (বাকারা: ১২৫)


৪. ছতর অর্থাৎ লজ্জাস্থান ঢেকে রাখতে হবে। শরিয়তের পরিভাষায় পুরুষগণের নাভি হতে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত এবং মহিলাদের চেহারা, কব্জি পর্যন্ত এবং পায়ের পাতা ব্যতিত সমস্ত শরীরকেই ছতর বা লজ্জাস্থান বলা হয়। এই ছতর নামায পড়ার সময় সম্পূর্ণ ঢেকে রাখতে হবে। (বাকারা-৩১)


৫. কিবলামুখী হওয়া। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে কেবলা মানেই কিন্তু পশ্চিম দিক নয়, কেবলা বলতে শরিয়তের পরিভাষায় কাবা ঘর যে দিক, সেদিকেই কেবলা, অর্থাৎ যে দেশে কেবলা যে দিকে সেদিকেই মুখী হয়েই নামায পড়তে হবে। (বাকারা-১৪৪)


৬. সময়মত নামায পড়া, অর্থাৎ ইসলামের পরিভাষায় নামায দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত, এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সময়সূচী রয়েছে, সঠিক সময় মেনেই এই পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়তে হবে। সময় অতিবাহিত হলেও নামায পড়া যায় কিন্তু ফরয ভঙ্গের অপরাধে গুনাহগার হতে হবে। (নিসা-১০৩)


৭. মনে মনে নির্দিষ্ট নামাযের নিয়ত করা। আপনি যদি ফজর নামাযের জন্য দাঁড়ান, তাহলে মনে মনে তাঁর নিয়ত করতে হবে, আপনি যদি সুন্নাত নামায পড়েন, নফল নামায পড়েন তাহলে তার‌ই নিয়ত করতে হবে। (বুখারী হা: নং ১)


✓ নামাযের ভেতরে ফরয ৬টি
১. তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ, শুরুতে আল্লাহু আকবার বলা। আল্লাহ আকবার বলেই নামায শুরু করতে হবে। নামাযের প্রথম ফরয এটি। অন্যকোনো তাকবীর বললে আপনার ফরয ভঙ্গ হয়ে যাবে। (মুদ্দাসসির: ৩)


২. ফরয ও ওয়াজিব নামায দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। কোনো রকম অপারগতা ছাড়া ফরয ও ওয়াজিব নামায গুলো দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। এই নামায গুলো দাঁড়িয়েই পড়তে হবে। (বাকারা-২৩৮)


৩. কিরাত পড়া। নামাযের মধ্যে কিরাত পড়া ফরয অর্থাৎ কোরআন শরীফের আয়াত তেলাওয়াত করতে হবে, এর পরিমাণ হলো সর্বনিম্ন তিন আয়াত হলেই আপনার নামাযের ফরয আদায় হয়ে যাবে কিন্তু আপনি চাইলে আরো বেশি পড়তে পারেন। (মুযযাম্মিল:২০)


৪. রুকু করা। নামাযের কার্যাদির মধ্যে রুকু অন্যতম। সূরা ফাতিহা এবং সূরা পড়ার পর রুকু করতে হয়। রুকুতে নির্দিষ্ট তাসবিহ পড়তে হয়। এটি খুব সুন্দর ভাবে আদায় করতে হবে।  


৫. দুই সিজদা করা। রুকু করার পর সিজদা করতে হয়। সিজদা প্রতি রাকাআতে দুটি করে আদায় করতে হয়। সিজদায় পড়তে হয় নির্দিষ্ট তাসবিহ এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ। 


৬. শেষ বৈঠক করা। শেষ বৈঠক বলতে আপনি যদি দুই রাকাআতের নামায পড়েন তাহলে দুই রাকাআত পরেই শেষ বৈঠক আর যদি চার রাকাআর হয় তাহরে চতুর্থ রাকাআতের শেষ একটা বৈঠক দিয়ে সালামের মাধ্যমে নামায সমাপ্ত করতে হবে। (আবূ দাউদ হা: নং ৯৭০)


নামাযের ফরয গুলো নূরানী নিয়মে খুবই সংক্ষেপে আপনি চাইলে মুখস্থ করে রাখতে পারেন। কেননা নামায পড়ার আগে ফরয গুলোর লক্ষ্য রেখেই নামায আদায় করতে হবে। এগুলো জেনে রাখা খুবই জরুরি। 



No comments

Powered by Blogger.