ছেলেদের চুলের যত্ন, করণীয়, বর্জনীয়

ছেলেদের চুলের যত্ন । করণীয় । বর্জনীয় ।


ছেলেদের চুলের যত্ন, করণীয়, বর্জনীয় 



■ কিছু কথা ।
নারী আর পুরুষের শরীরের গঠনের পাশাপাশি তাদের ত্বক ও চুলের ধরনও ভিন্ন হয় থাকে। নারীর তুলনায় বেশি রুক্ষ হওয়ার কারণে পুরুষের চুলের জন্য বেশি যত্ন নেয়া প্রয়োজন। একসময় নিজেদের চেহারার প্রতি উদাসীন থাকলেও এখন সেই দিন অনেক বদেলেছে। আজকাল ছেলেরাও নিজের চেহারার ব্যাপারে কমবেশি সচেতন। তাই সৌন্দর্য চর্চা আর কেবল নারীদের বিষয় নয়। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে অনেক পুরুষই নিজের জন্য এই সময়টুকু বের করতে পারেন না, অনেকেই আবার ইচ্ছা থাকলেও সঠিক উপায় না জানার কারণে সৌন্দর্য চর্চা করতে পারেন না। সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে যেমন আমরা প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খাই,সেরকমই চুলের যত্ন আমরা প্রতিদিন নেব না কেন?মাসে একবার বা দু’বার হেয়ার প্যাক বা হেয়ার অয়েল বা একবার করে হেয়ার স্পা করলেই কিন্তু হবে না।চুলের যত্ন নিতে হবে প্রতিদিন।তাহলেই আপনার চুল থাকবে ঘন,কালো,মজবুত এবং জেল্লাদার।তাই প্রতিদিনের চুলের যত্নের রুটিনটি ঠিক কেমন হবে তা চটপট পড়ে ফেলুন আজকে।প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে আমরা ঠিকমত চুলের যত্ন নিতে ভুলে যাই অথচ চুল ঝরে গেলে বা রুক্ষ হয়ে গেলে তখন আমাদের বোধোদয় হয়।এবার থেকে তাই সকাল থেকে রাত অবধি রুটিন মাফিক চুলের যত্ন নিন।তবে এর জন্য আপনাকে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবে না।


ছেলেদের চুলের, ত্বকের যত্নের দরকার নেই, এটি শুধুমাত্র মেয়েদের কাজ- এই ধারণা থেকে বর্তমানে ছেলেরা বের হয়ে আসছে। উজ্জ্বল চুল, উজ্জ্বল ত্বক আপনার সৌন্দর্য যেমন বাড়িয়ে তুলবে তেমনি আপনাকে করে তুলবে আত্মবিশ্বাসী। তাই চুলের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন।


■ ছেলেদেরও চুলের সমস্যা গুলো |
চুলের সমস্যা ছেলেদেরও কম নয়। কিন্তু চুলের যত্নের ব্যাপারে অনেক ছেলেই উদাসীন থাকে। এতে পরবর্তীতে গিয়ে তাদের চুলে নানা ধরণের সমস্যা দেখা যায়। তারা মনে করে শুধু মেয়েদের চুলের যত্নের প্রয়োজন। কিন্তু নারীদের চাইতে পুরুষের মাথার ত্বকের ধরণ আলাদা। তাই পুরুষের চুলের বাড়তি যত্ন নিতে হয় কিছুটা বেশি। চুল পড়ার সমস্যা ছেলেদের অনেক বেশী হয়। এছাড়াও আছে চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, চুলের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাওয়া, তেলতেলে চুল, খুশকি ইত্যাদি হরেক রকম। এতো সমস্যা থাকলেও ছেলেদের চুলের নানা সমস্যার সমাধানও আছে। আর ছেলেরা যেহেতু বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকে এতে তাদের চুলের অধিক যত্ন প্রয়োজন। চলুন জেনে নেই পুরুষের চুলের যত্নে দারুণ কার্যকরী কিছু উপায়, যা চুল পড়া ও খুশকি প্রতিরোধ করবে এবং মলিন আর বিবর্ণ চুলকে সুন্দর করে তুলবে।
【1】 টাক পড়া |
টাক পড়া ছেলেদের অন্যতম একটি সমস্যা। প্রায় একই কারণে মাথায় টাক পড়া ও চুল পাকা হয়ে থাকে। আজকাল অল্প বয়সী ছেলেদের মধ্যেও টাক পড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। অল্প বয়সে টাক পড়ার নানা কারণ আছে। টাক পড়াকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেশিয়া বলা যায়, যা কপালের দুই পাশে রগের কাছ থেকে শুরু হয়। তারপর ক্রমেই বাড়তে থাকে মাথার সামনের দিকে এবং এটা আস্তে আস্তে পেছনের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তখন পুরো মাথার চুল পড়ে যায়। বংশগত বা হরমোনজনিত কারণে এটি হতে পারে। আবার বয়ঃসন্ধিকাল থেকেও কারো কারো টাক পড়া শুরু হয়ে যায়। এছাড়া অল্প বয়সে চুল পড়ার জন্য অনেকাংশে দায়ী থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ। রক্তস্বল্পতা, ওজন কমানোর জন্য খাওয়া-দাওয়া একদম কমিয়ে দেয়াও চুল পড়ার কারণ হতে পারে। টাক পড়া দীর্ঘস্থায়ী অসুখ। অনেক কারণে মাথায় টাক পড়তে পারে। চুলের পুষ্টি আসে ত্বকের পুষ্টি থেকে। ত্বকের পুষ্টির জন্য আমাদের ভালো খাবার খেতে হবে। চুলের পুষ্টির কারণেও অনেক সময় মাথায় টাক পড়ে। বংশগত কারণেও টাক পড়ে। তাছাড়া চুল ভালোভাবে পরিষ্কার না করা, দুশ্চিন্তা করা ইত্যাদি কারণে মাথায় টাক পড়ে থাকে। কিছু জিনিস ভালোভাবে মেনে চললে মাথায় টাক পড়া কিছুটা কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ট্রিটমেন্ট ভালো কাজ করবে।
【2】 চুল পাকা |
অনেক সময় অল্প বয়সে চুল পেকে যায় বা সাদা হয়ে যায়। অনেক কারণে অল্প বয়সে চুল পেকে যেতে পারে। চুলের গোঁড়ায় থাকা মেলানোসাইটের কারণে চুলের রং কালো হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে মেলানোসাইট ক্ষতিগ্রস্ত হলেই চুল সাদা হয়ে যায়। অনেক সময় চুলের গোঁড়ায় খাদ্য ও অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে অল্প বয়সে ছেলেদের মাথার চুল পেকে যায় বা সাদা হয়ে যায়। তবে পাকা চুলের ব্যাপারে বংশগত ধারা একটি বিরাট কারণ। পাকা চুল ঢাকতে চুলে কালার করা যেতে পারে। একবার চুল পাকলে তার প্রতিকার করা যায় না। তবে হেয়ার ট্রিটমেন্ট চুল পাকা থেকে কিছুটা রোধ করে। চুল পাকা কমাতে হরীতকী, মেহেদিপাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে টনিক হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এতে চুল পাকা কমে যেতে পারে। এছাড়া জবা ফুল বাটা, গন্ধরাজ বাটা, আমলা বাটা একসাথে মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল কালো ও উজ্জ্বল হয়।
【3】 চুল পড়ার কারণ |
চুল পড়ার অনেক বড় একটি সমস্যা ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্য। আর চুল পড়ার কারন সর্বদা দুশ্চিন্তা, ভয়, আশংকা, অশান্তির মধ্যে কাটালে অনেক সময় চুল পড়ে যেতে পারে। টাটকা শাক-সবজি, ফলমূল ইত্যাদি পরিমাণমতো না খেলে চুল পড়ে বা পেকে যেতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম, কায়িক পরিশ্রম না করলে শরীরের রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছে না। এ থেকেও চুল পড়ে। সৌন্দর্যচর্চার নানা কৃত্রিম পদ্ধতি বেশি ব্যবহারের ফলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বারবার রিবন্ডিং, রঙ করা চুলের ক্ষতির কারণ। পরিবেশ দূষণ, পানিদূষণ, বায়ুদূষণ ইত্যাদি পরোক্ষভাবে দ্বায়ী চুল পড়ার জন্য।
【4】 খুশকি থেকে মুক্তি |
আমাদের জীবনে খুশকি সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। কারণ এটি অতি সাধারণ একটা সমস্যা। মাথার ত্বকে নতুন কোষ তৈরি হয় এবং পুরনো কোষগুলো ঝরে যায়। এটা একটা ক্রম। কিন্তু পুরনো কোষগুলো যখন ঠিকঠাক মতো ঝরে যেতে পারে না তখন সেগুলো জমে যায় এবং ফাঙ্গাস সংক্রমিত হয়। ফলে খুশকি হয়। মাথা থেকে সাদা গুঁড়ার মতো খুশকি পড়ে এবং মাথা চুলকায়। মাথায় খুশকির সৃষ্টি নানা ভাবে হতে পারে। মাথার ত্বক যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়, যদি চুল নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয় তাহলে সহজেই খুশকি হয়। স্কাল্প বা মাথার ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হলেও খুশকি হতে পারে। এমনি মানসিক দুশ্চিন্তার কারণেও খুশকি হয়। শীতকালে আবহাওয়া থাকে শুষ্ক ও ধুলাবালিযুক্ত। ফলে খুশকির প্রকোপও বেড়ে যায়। যাদের খুশকির সমস্যা অন্যান্য সময় থাকে না, দেখা যায় শীতকালে তাদেরও খুশকির সমস্যা হয়। খুশকি কোনো রোগ বা রোগের লক্ষণ নয়। তবে চুল ও মাথার ত্বকের সামান্য যত্ন নিলেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। নিজের চিরুনি, ব্রাশ, তোয়ালে, বালিশের কভার যথাসাধ্য পরিষ্কার এবং আলাদা রাখতে হবে। তাতেই খুশকি অনেক কমে যাবে।


■ বিশেষ করনীয় ।
【1】 ঘুম থেকে উঠে চুল আঁচড়ে নিন |
সকালে ঘুম থেকে উঠে চুল আঁচড়ানো খুব জরুরি।আমরা যতই চুল বেঁধে ঘুমোই না কেন,ঘুম থেকে ওঠার পর তাতে অল্প বিস্তর জট হয়েই যায়।তাই সকালে উঠে চুল খুলে ভালো করে চুল আঁচড়ে নিন।এতে রাত ভর আপনার চুলের গোড়ায় যে প্রাকৃতিক তেল নির্গত হয় তা আপনার চুলে ছড়িয়ে যায়,যা আপনার চুলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।অন্তত ৫-১০ মিনিট নিজের চুল কে প্যাম্পার করুন।
【2】 চুল ধুয়ে নিন |
চুল নিয়মিত ভালো করে না ধুলে কিন্তু খুব বিপদ।চুলের ধরণ অনুযায়ী তা আলাদা হওয়া প্রয়োজন।যাদের নর্মাল চুল তারা একদিন পরপর চুল ধুতে পারেন।যাদের তৈলাক্ত চুল তারা প্রতিদিন চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন।যাদের রুক্ষ চুল তারা দু’দিন পরে একবার করে চুল ধুলে ভালো।রুক্ষ চুল যাদের তাদের চুলকে নমনীয় করে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত।আবার যাদের তেলতেলে চুল তাদের অয়েল ক্লিয়ার শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো।আর নর্মাল চুল হলে যে কোনো ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।শ্যাম্পু ভালো করে মাথায় সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করা উচিত।এছাড়া কন্ডিশনার ব্যবহার করাও উচিত। বাজার চলতি অনেক শ্যাম্পুর মধ্যে এই তিনটির যেকোনো একটি  ব্যবহার করতে পারেন। নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে দেখুন।
【3】 ভেজা চুলের যত্ন |
স্নান করার পর নরম তোয়ালে দিয়ে চুল মুছে নিতে হবে।তবে চেপে চেপে মুছতে হবে।কখনই তোয়ালে দিয়ে চুল জোরে জোরে ঘষে মোছা উচিত নয়।ভেজা চুল নরম থাকে,তাই ঘষলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এক্ষেত্রে চুলে তোয়ালে পেচিয়ে রাখুন।এতে আপনার মাথার অতিরিক্ত জল তোয়ালে শুষে নেবে।একটু শুকিয়ে গেলে তবেই চুল আঁচড়ে নেবেন।
【4】 রাতে চুলের যত্ন নিন |
রাতে কিন্তু চুলের যত্ন নেওয়া খুব প্রয়োজন।একদিন বা দু’দিন পরপর একবার করে রাতে ভালো করে মাথায় অয়েল ম্যাসাজ করা খুব জরুরি।এতে চুল পুষ্টি পায় এবং চুল মজবুত হয়।তেল মাখুন বা না মাখুন,রাতে কিন্তু আরেকবার ৫-১০ মিনিট ধরে চুল আঁচড়ে নিয়ে চুল বেঁধে শুলে চুল ভালো থাকে।
【5】 প্রতিদিন কাজে বেরোনোর সময় বা বাড়িতে থাকলে চুল বাঁধাটা কিন্তু একটা বড় কাজ।কখনই ভেজা চুল বাধা উচিত নয়।খুব বেশি তাড়া থাকলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করতে পারেন,কিন্তু অকারণে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো।এতে চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।কোনো অনুষ্ঠান থাকলে হেয়ার স্টাইলিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করতেই পারেন,কিন্তু এগুলি নিয়মিত ব্যবহার করা একেবারেই ভালো নয়।


■ বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে |
★ নিয়মিত চুল আঁচড়াতে হবে। এতে খুশকি হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
★ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এতে মাথার ত্বক ও চুল ভালো থাকবে।
★চুল নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। কারণ অপরিচ্ছন্ন চুলে খুশকি হয় বেশি।
★ কিছু চর্মরোগ সাধারণভাবে দেখতে খুশকির মতো হয়। তাই মাথায় খুশকির পরিমাণ বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
★ শ্যাম্পু করার আগে চুলে তেল ম্যাসাজ করুন। তেলের সঙ্গে আমলা বাটা, বাদাম বাটা, সিরকা মিশিয়ে নিন।
★ শ্যাম্পুর পর চুলে কন্ডিশনার দিন।
★ চুল কালার না করাই উত্তম কাজ। কারণ চুল কালার করার ফলে চুলের ক্ষতি হতে পারে। চুল রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।
★ নিয়মিত চুল আঁচড়ালে খুশকি হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
★ চুল নিয়মিত পরিষ্কার করুন। কারণ অপরিচ্ছন্ন চুলে খুশকি হয় বেশি।
★ চুলের সাথে সামঞ্জস্যহীন ব্র্যান্ডের ভাল শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
★ চুলের পুষ্টির জন্যে পানি জাতীয় খাবার, পানি, ফল, শাক-সবজি ইত্যাদি নিয়মিতি বেশি করে খেতে হবে। এতে চুল শুধু ঝলমলে আর সুন্দরই হবে না, চুল ঝরে পড়াও বন্ধ হবে।
★ মাথার ত্বকে ফোসকা বা ঘামাচি দূর করতে সপ্তাহে একদিন নিমপাতা ভেজানো পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে নিতে হবে।


■ ছেলেদের চুলের যত্নে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
【1】 ভালো শ্যাম্পু বাছাই করা |
বাজারে ছেলেদের চুলের উপযোগী বিভিন্ন শ্যাম্পু পাওয়া যায়। কিন্তু সপ্তাহে কয়দিন শ্যাম্পু করতে হবে, চুলের ধরণের সাথে মিলিয়ে কি ধরণের শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে এই ব্যাপারগুলো অনেকেই জানে না। উলটো অনেকে আজেবাজে কিংবা চুলের সাথে সামঞ্জস্যহীন ব্র্যান্ড ব্যবহার করার কারণে চুলের আরো ক্ষতি করে ফেলে। তাই নিজের চুলের ধরণের সাথে মিলিয়ে ভাল একটি শ্যাম্পু বেছে নিতে হবে।
【2】 শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার ব্যবহার |
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহারে চুল ঝরঝরে হয়ে ওঠে। তাই শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। কন্ডিশনার এর স্থলে এক মগ পানিতে লেবুর রস দিয়েও চুল ধুয়ে নিতে পারেন। কন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কন্ডিশনার যেন চুলের গোঁড়া ও মাথার ত্বকে না লেগে থাকে সেটাও খেয়াল রাখবেন।
【3】 মাথার ত্বক ম্যাসাজ |
মাথায় তেল লাগানোর সময় বা শ্যাম্পু করার সময় আঙ্গুল দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মশা করতে হবে। এতে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া দিনে কয়েকবার মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন।
【4】 জেল, হেয়ার স্প্রে দিয়ে অনেকক্ষণ রাখা যাবে না |
ছেলেরা বেশিরভাগ সময় যে ভুলটি করে থাকে, তা হল চুলে অনেক সময় ধরে জেল হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করে। এতে সহজেই চুলে ময়লা ধুলোবালি আটকে যায়। এছাড়া লম্বা সময় ধরে জেল ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের সমস্যা হতে পারে। তাই দিনের বেলা যখন আপনার বাইরে কাজ করার সম্ভাবনা বেশি তখন জেল ব্যবহার করবেন না। আর যখনই জেল বা হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করবেন চেষ্টা করবেন দ্রুত বাসায় ফিরে চুল ধুয়ে ফেলতে।
【5】 অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় |
প্রচুর পানি পান করতে হবে হবে, চা-কফি, ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। সেলুনে অনেকে চুল কাটার পর জোরে জোরে মাথা ম্যাসেজ করিয়ে নেয়। এতে চুলের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়। এইসব করা যাবে না। আর পাঁচ মিনিটে করা যায় এরকম একটি চুলের ফ্যাশন বা স্টাইল বেছে নিতে হবে।


■ চুলের পরিচর্যার কিছু সহজ টিপস |
【1】 মেথির প্যাক |
সারারাত মেথি ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেটি পেস্ট করে নিন। এরপর মেথির পেস্টের সাথে টক দই দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। মেথি আপনার চুলকে নরম এবং শাইনিও করবে।
【2】 পেঁয়াজের রস |
নতুন চুল গোঁজাতে পেঁয়াজের রসের বিকল্প নেই। ২/৩টি বড় সাইজের পেঁয়াজের রস মাথার তালুতে ভাল ভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। ঘন্টাখানিক পর শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। আপনি চাইলে পেঁয়াজের রসের সাথে আমলকীর রস ও দিতে পারেন।
【3】 ডিমের প্যাক |
চুল পড়া রোধে ডিম সবচেয়ে ভাল উপাদান। একটি ডিমের সাদা অংশ, ১ টেবিল চা চামচ মধু, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল সবগুলো উপাদান দিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি ভাল করে মাথা লাগান। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। ডিম আপনার চুলের পুষ্টি যোগান দিবে সাথে সাথে আপনার চুল্কে করবে সিল্কি।
【4】 মেহেদির প্যাক |
মেহেদির সাথে আমলকীর গুঁড়া, ২ টেবিল চামচ দুধ দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। ১ ঘণ্টার পর শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে ফেলুন। বাইরের ক্রেমিক্যাল পণ্য দিয়ে চুল রং না করে মেহেদি ব্যবহার করা অনেক বেশী নিরাপদ। এটা চুলের গোঁড়াকে মজবুতও করে।
【5】 কলার প্যাক |
একটি পাকা কলার পেস্ট, ১ টেবিল চামচ মধু, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি ভালভাবে মাথায় লাগান। শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। বাইরে ঘোরাঘুরির কারণে ছেলেদের চুল খুব রুক্ষ হয়ে যায়। চুলের রুক্ষতা দূর করতেও এই প্যাক অনেক বেশী কার্যকরী।
■ শীতকালে ছেলেদের চুলের যত্ন |
【1】 হট অয়েল |
শীতের দিনগুলিতে সবচেয়ে বেশি উপকার হট অয়েল ম্যাসাজে। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, বাদাম তেল ইত্যাদি যে কোনো চুলে মাখার তেল হালকা গরম করে তা হালকা হাতে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে লাগাতে হবে। তা কম করে আধ ঘণ্টা বা ৪০ মিনিট রেখে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
【2】 লেবু হট অয়েল |
যাদের খুসকির সমস্যা ভোগাচ্ছে তারা এই গরম তেল বা হট অয়েল ম্যাসাজের সঙ্গে অবশ্যই পাতি লেবুর রস ব্যবহার করতে পারে। লেবুর রস খুসকি দূর করতে সিদ্ধ হস্ত। তার জন্য গরম তেল নিতে হবে – নারকেল, অলিভ, জলপাই, বাদাম বা যে কোনো মাথায় মাখার তেল। তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ফেলে মিশিয়ে নিয়ে নিয়ম করে সপ্তাহে অন্তত দুই বা তিন দিন করলে ভালো ফল পাবে।
【3】 তেল টকদই |
লেবু ছাড়া টকদইও এই ট্রিটমেন্টে ভালো কাজ করতে পারে। তাই তেলের সঙ্গে টকদই মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে হবে। তবে টকদইটি ঘরে পাতা হলে বেশি ভালো। তা চুলের রুক্ষতা দূর করতে পারে।
【4】 অ্যলোভেরা জেল |
চুলকে কোমল মখমলের মতো করতে হলে অ্যলোভেরা জেল খুবই উপকারী। এই জেল শুধু চুল কোমল করে না, চুল ঝরে পড়াও অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
【5】 লেবু পেঁয়াজের রস |
পেঁয়াজের দাম আকাশ ছোঁয়া হলেও পেঁয়াজের গুণাগুণকে অস্বীকার করা যায় না। চুলের যত্নে আরও একটি কার্যকর টোটকা হল – লেবু ও পেঁয়াজের রস। লেবুর মতো পেঁয়াজও চুলের জন্য খুব খুব ভালো একটি উপকরণ। পাতি লেবু এবং পেঁয়াজ রস এক সঙ্গে মিশিয়ে চুলে মাখতে হবে। এতে খুসকি তো দূর হবেই, সঙ্গে জেল্লাও বাড়বে।
【6】 ট্রিম |
শীতের দিনের আরও একটি সমস্যা হল চুল রুক্ষ হয়ে ফেটে যাওয়া। তাই চুলের ডগা ফাটা দেখতে পেলেই দেরি না করে চুল ট্রিম করা বা ডগা ছেঁটে নেওয়া দরকার।


THANK YOU ALL
A N I .

No comments

Powered by Blogger.