মুঘল সাম্রাজ্য, ভারত উপমহাদেশের ঐতিহাসিক সাম্রাজ্য



মুঘল সাম্রাজ্য

ভারত উপমহাদেশের ঐতিহাসিক সাম্রাজ্য



■ শাব্দিক অর্থ ।
মুঘল বা মোগল সাম্রাজ্য (উর্দু: مغلیہ سلطنت‎‎, Mug̱ẖliyah Salṭanat, ফার্সি: گورکانیان‎‎, Gūrkāniyān)), ছিল ভারত উপমহাদেশের একটি সাম্রাজ্য।উপমহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলজুড়ে মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্য মূলতঃ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত ছিল।


■ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ।
পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইবরাহিম লোদির বিরুদ্ধে বাবরের জয়ের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। মুঘল সম্রাটরা ছিলেন মধ্য এশিয়ার তুর্কো-মঙ্গোল বংশোদ্ভূত। তারা চাগতাই খান ও তৈমুরের মাধ্যমে চেঙ্গিস খানের বংশ১৫৫৬ সালে আকবরের ক্ষমতারোহণের মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের ধ্রূপদী যুগ শুরু হয়। আকবর ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের শাসনামলে ভারতে অর্থনৈতিক প্রগতি বহুদূর অগ্রসর হয়। আকবর অনেক হিন্দু রাজপুত রাজ্যের সাথে মিত্রতা করেন। কিছু রাজপুত রাজ্য উত্তর পশ্চিম ভারতে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখে কিন্তু আকবর তাদের বশীভূত করতে সক্ষম হন। মুঘল সম্রাটরা মুসলিম ছিলেন তবে জীবনের শেষের দিকে শুধুমাত্র সম্রাট আকবর ও তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর নতুন ধর্ম দীন-ই-ইলাহির অনুসরণ করতেন।
মুঘল সাম্রাজ্য স্থানীয় সমাজে হস্তক্ষেপ করত না তবে প্রশাসনিকভাবে এসববের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হত।অনেক বেশি কাঠামোগত, কেন্দ্রীভূত শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। মুঘল শাসনামলে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন গোষ্ঠী যেমন মারাঠা, রাজপুত ও শিখরা সামরিক শক্তি অর্জন করে।


শাহজাহানের যুগে মুঘল স্থাপত্য এর স্বর্ণযুগে প্রবেশ করে। তিনি অনেক স্মৃতিসৌধ, মসজিদ, দুর্গ নির্মাণ করেন যার মধ্যে রয়েছে আগ্রার তাজমহল, মোতি মসজিদ, লালকেল্লা, দিল্লি জামে মসজিদ। আওরঙ্গজেবের শাসনামলে মুঘল সাম্রাজ্যের সীমানা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছায়। শিবাজী ভোসলের অধীনে মারাঠাদের আক্রমণের ফলে সাম্রাজ্যের অবনতি শুরু হয়। আওরঙ্গজেবের সময় দক্ষিণ ভারত জয়ের মাধ্যমে ৩.২ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটারের বেশি অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্গত হয়। এসময় সাম্রাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ১৫০ মিলিয়নের বেশি যা তৎকালীন পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ এবং জিডিপি ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।


১৮শ শতাব্দীর মধ্যভাগ নাগাদ মারাঠারা মুঘল সেনাবাহিনীর বিপক্ষে সফলতা লাভ করে এবং দক্ষিণাত্য থেকে বাংলা পর্যন্ত বেশ কিছু মুঘল প্রদেশে বিজয়ী হয়। সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার দুর্বলতার কারণে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ সৃষ্টি হয় যার ফলে বিভিন্ন প্রদেশ কার্যত স্বাধীন হয়ে পড়ে। ১৭৩৯ সালে কারনালের যুদ্ধে নাদির শাহের বাহিনীর কাছে মুঘলরা পরাজিত হয়। এসময় দিল্লি লুন্ঠিত হয়। পরের শতাব্দীতে মুঘল শক্তি ক্রমান্বয়ে সীমিত হয়ে পড়ে এবং শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের কর্তৃত্ব শুধু শাহজাহানাবাদ শহরে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। সিপাহী বিদ্রোহের সমর্থনে তিনি একটি ফরমান জারি করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহ ব্যর্থ হলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার বিরুদ্ধে রাজদ্রোহীতার অভিযোগ এনে কারাবন্দী করে। শেষে তিনি রেঙ্গুনে নির্বাসিত হন এবং সেখানেই মারা যান।
BY WIKIPEDIA.

THANK YOU ALL
A N I

No comments

Powered by Blogger.