প্রশ্নবিদ্ধ প্রসঙ্গ

THE CONTEXT IN QUESTION | প্রশ্নবিদ্ধ প্রসঙ্গ |


A N I
8 | JANUARY | 2020 |
THE CONTEXT IN QUESTION | প্রশ্নবিদ্ধ প্রসঙ্গ |

■ প্রসঙ্গ ।  

বাংলাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল প্রকার ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়া দরকার । বক্তাদের তথা আলেমদের এই রেষারেষি ইসলামের অনেক বড় ক্ষতি হচ্ছে । বিশেষ করে সাধারণ মানুষ ধর্মের দিশা হারিয়ে ফেলছে । কয়েক বছর বন্ধ থাকলে আশা করি এই রেষারেষি কিছুটা বন্ধ হবে । না হয় আপনি কল্পনা করুন এই বছর এই অবস্থা, আগামী বছর কি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, আলেমদের পারিবারিক কলহের জের এখন ভাইরাল ,আর কি‌ই বা দেখতে হবে ,,,,,বড় বড় বক্তাগন যখন ভুল কথা বলবে ,ভুল বিশ্লেষণ করবে তখন সেটা বিতর্কের খোরাক তো হবেই ।

বাংলাদেশের বর্তমানে অনেক বক্তা আছে যাদের ফতোয়া তো দুরের কথা ওয়াজ করার মতোও ইলম আমল নেই তারপরও তারা ওয়াজ তো চালিয়ে যাচ্ছেই রিতিমত ফতোয়া জারি করেও বেড়াচ্ছে ,তাহলে বক্তাদের এই খামখেয়ালির লাগাম ধরবে কে !

একজন বক্তা একটা ওয়াজ মাহফিলে বসে যদি ওয়াজ মাহফিল সুলভ আচরণ না করেন ,যদি সভা সেমিনার এর মতো আচরণ করে তাহলে বুঝতে হবে সেই বক্তা কান্ড জ্ঞানহীন । নিচক বোকা ছাড়া আর কেউ নন

বাংলাদেশের বর্তমানে বক্তাগন ইসলামের অনেক মৌলিক বিষয়েও একমত তো দুরের কথা দ্বিমত বা তৃমতেও মিলতে পারেনি ।
 
অনেক বক্তা নিজের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে প্রতিপক্ষের জ্ঞানের স্বল্পতার সুযোগ নিচ্ছেন , ইচ্ছে করেই প্রতিপক্ষের মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন  ,
যেমন আজহারী হুজুর একটা কথা বললো কিন্তু কুয়াকাটা হুজুর ইচ্ছে করেই তার দ্বিমত পোষণ করলো , অনেক ক্ষেত্রে আজহারীর কথাও সঠিক আবার কুয়াকাটা হুজুরের টাও সঠিক কিন্তু কুয়াকাটা হুজুর ইচ্ছে করেই আজহারীকে দ্বিমত করছেন কারণ ইসলামী জ্ঞান বা ইলম কুয়াকাটা হুজুরের যতটুকু আছেন আজহারীর তার অর্ধেকের অর্ধেকও নেই , কাজেই আজহারীর সমর্থন গোষ্ঠী ফেটে পড়ে যে কুয়াকাটা হুজুর আজহারীর বিরোধিতা করছেন । অনেক ক্ষেত্রেই কুয়াকাটা হুজুর আজহারীর ভুল গুলোও ধরিয়ে দিচ্ছেন কারণ আজহারীর যায়গায় আজহারীর মতো ব‍্যক্তি এত অনুসারীদের মধ্যে যদি ভুল বলে তাহলে ইসলামের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে । লাখো মানুষ ভুল ভাবে ইসলাম বুঝবে । আজহারীর মতো আলেম যদি ভুল বক্তব্য দিয়ে আবার সেই ভুলের ব‍্যখ‍্যা দিয়ে তার ভুল স্বীকার করছে তাহলে বুঝতে হবে ইসলাম সম্পর্কে আজহারীর পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই , তাহলে সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ থেকেই যায় আজহারী সামনের মাহফিলে সঠিক বক্তব্য দেবে তো ?  নাকি আবারও ভুল কিছু হয়ে যায় । 

বর্তমান বক্তাগন যত বড় নাম নিয়ে আসেন ,তত বড় ইলেম এবং আমল নিয়ে আসেন না ।

প্রতিয়মান হচ্ছে কয়েক জন বক্তাগন একে অপরের সাফাই গাইছে । যেমন আজহারী , আমির হামজা, তারেক মনোয়ার, আফসারি একজোট হয়ে একে অন‍্যকে সমর্থন করছে , কারণ এরা সবাই এক ধরনের সেকুলার সিস্টেমের আলেম , এদের কারোরই ফতোয়া দেয়ার মতো যতেষ্ট জ্ঞান নেই , হয় তো এরা মানুষকে ওয়াজ নসিহত করতে পারেন ।

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সরকারের উচিৎ সবগুলো ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়া , সর্বোচ্চ থানা পর্যায়ে একটি থানায় একটি মাঠে বছরে একবার‌ই ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হতে পারবে এই মর্মে আইন প্রয়োগ করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে । রাস্তার মোড়ে মোড়ে, স্কুলের মাঠে,খেলার মাঠে, মসজিদের মাঠে ,ওলিতে গলিতে ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়া উচিৎ । প্রচুর পরিমাণ ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হ‌ওয়ার কারনে মানুষ মানুষে,বক্তায় বক্তায় ,আয়োজক আয়োজকে পাল্লা দিয়ে বিভেদ বাড়ছে প্রচণ্ড আকারে ।
 
এই ওয়াজ মাহফিল এখন আর মহত্ত্বে নেই । এই ওয়াজ মাহফিল এখন যুবসমাজের কাছে অনেকটা শীত কালীন পিকনিকে পরিনত হয়েছে । ওয়াজ মাহফিলের নামে অগনিত টাকা উঠছে,আর আয়োজক সম্পৃক্ত সবাই ধুমধাম করে কয়েকটা দিন খাচ্ছে ফিরছে । এখন ওয়াজ মাহফিল ঘিরে মৌসুমী দোকানদার বা ব‍্যবসায়ীর সংখ‍্যাও বাড়ছে । এই গলি ঐ গলি আজ ,না কাল ঘুরে ঘুরে দোকানদারি করছে । অনেক মাহফিল কমিটি এই অস্থায়ী দোকানদারদের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা নিয়ে থাকে ।

আমি খেয়াল করেছি জনাব আজহারী এখন আর মাহফিল শব্দটা তেমন ব‍্যবহার করেন না তিনি এখন ব‍্যবহার করেন প্রোগ্রাম , যেমন আমি কুমিল্লার প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম, আমার বরিশালের প্রোগ্রামে অনেক মানুষ হয়ে ,এই প্রোগ্রাম ঐ প্রোগ্রাম ইত্যাদি । আসলে তারা আর ওয়াজ মাহফিলকে ওয়াজ মাহফিল মনে করে না তারা এটাকে মনে করে প্রোগ্রাম, এটা একটা পিকনিক।

এখন আপনি বলতে পারেন প্রোগ্রাম আর মাহফিল এর অর্থ তো এক‌ই ,একটা ইংরেজি আরেকটা আরবি । আমি বলবো না , দুটোর শব্দার্থ এক হলেও দুটো ভাবার্থ সম্পূর্ণ আলাদা । আর আজহারী যদি মাহফিল আর প্রোগ্রাম কে এক‌ই মনে করেন তাহলে বলবো তিনি তার মা ফাতিমার ঐ ইন্টেক তত্ত্বে এখনও বহাল, যদিও তিনি এই রকম শব্দ ফিরিয়ে নিয়েছেন ।
একজন বক্তা একটা ওয়াজ মাহফিলে বসে যদি ওয়াজ মাহফিল সুলভ আচরণ না করেন ,যদি সভা সেমিনার এর মতো আচরণ করে তাহলে বুঝতে হবে সেই বক্তা কান্ড জ্ঞানহীন । নিচক বোকা ছাড়া আর কেউ নন ।

বর্তমান সময়ের ওয়াজ মাহফিল গুলো নিয়ে উদ্বেগের প্রধান কারন হলো জামাত শিবিরের স্বকীয়তা । বর্তমান সময়ের 95% ওয়াজ মাহফিল‌ই জামাত শিবির নিয়ন্ত্রণ করে থাকে । গ্রাম থেকে শহর সবখানেই সবার চোখের সামনে জামায়াতের কর্মীরা আয়োজক ,জামায়াতের নেতারা বক্তা । জামাত শিবির এই ওয়াজ মাহফিলের নামে নিজেদের সভা সমাবেশ সেরে নিচ্ছে । ভেতরে ভেতরে নিজেদের সংগঠনকে জীবিত রাখছে । অনেক জেলার ওয়াজ মাহফিল গুলোতে আওয়ামী লীগের নেতাদের সভাপতি করে জামাত শিবিরের বক্তা দ্বারা ওয়াজ মাহফিল করাচ্ছে । অনেক ওয়াজ মাহফিল জামাত শিবিরের বক্তা জেনেও থানার পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে ।

বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ ওয়াজ মাহফিলের সভাপতি দেয়া হয় আওয়ামী লীগের নেতাদের , ধর্মীয় ভারসাম‍্যে এটাও একটা বড় বাধা । আওয়ামী লীগের নেতারা সভাপতিত্বে তার ভাষণ কালে রাজনৈতিক আলাপচারিতায় লিপ্ত হয়ে যায় । প্রসঙ্গে অপ্রসঙ্গে নানান রকমের কথা এসেই যায়, যা কিনা একটা ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলের জন্য অশোভন ।
বর্তমান বক্তাগন যত বড় নাম নিয়ে আসেন ,তত বড় ইলেম নিয়ে আসেন না ।

কাজেই সরকারের উচিৎ ক‌ওমি মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদীস কিংবা তার‌ও উপরে পড়া লেখা থাকতে হবে এই মর্মে আইন পাস করা । কারণ আলিয়া মাদ্রাসায় দাখিল আলিম পড়ে নিজে কোন মতে ইসলামী জীবন যাপন করতে পারা যায় কিন্তু ওয়াজ মাহফিলের মতো , ফতোয়ার মতো , তাফসীরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ তাদের দিয়ে হবে না ।

বর্তমান সময়ে ওয়াজ মাহফিল অতিরিক্ত হ‌ওয়ার কারণে নামী বক্তাগন সিডিউল দিতে পারছে না ,আর এই সুযোগে তারাও অনেক বড় অংক চেয়ে বসে ,তারপরও মানুষ দিতে রাজি হচ্ছে, এই সুযোগে এক একজন বক্তা প্রতি মৌসুমে কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে । অতিরিক্ত টাকার লোভ পেয়ে বসেছে তাদের ।
তাই সকলকেই সংযত হ‌ওয়ার চেষ্টা করতে হবে ।

বর্তমান সময়ে ইসলামী জ্ঞান অর্জন করতে হলে তার জন‍্য‌ও জ্ঞান অর্জন করা লাগে । যেমন আপনি কোন বক্তার ওয়াজ শুনবেন, কোন বক্তা হক্কানী বক্তা সেটা চেনার জন‍্য‌ও আপনাকে ইসলামী জ্ঞান লাগবে । চারপাশে সব হক্ব আর ভ্রান্তের দলাদলি, আপনি সাধারণ মানুষ হয়ে কোন পথে যাবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই সেই ব‍্যপারে ধারণা নিয়ে নিতে হবে । আপনি যার তার কথায় প্রভাবিত হয়ে বিশ্বাস নষ্ট করবেন না । আপনাকে আগে ভালো করে দেখতে হবে কারা ইসলামের উপর চলছে আর কারা ইসলামের ছদ্মবেশে নিজেকে প্রভাবশালী করে তুলছে , নিজেকে বিত্তশালী করে তুলছে । আপনাকে বুঝতে হবে কারা পুরোপুরি ইসলামী জীবন যাপন করছে আর কারা কিছু অংশ মানছে আর কিছু অংশ মানছে না , নিজেদের সুবিধা মতো ইসলামকে কেটে ছেটে ব‍্যবহার করছে । কারা নিজেদের স্বার্থে ধর্মীয় অনুসংঙ্গকে কাটছাঁট করে ।এগুলো খুব খেয়াল রাখতে হবে । 

THANK YOU ALL.
A N I .

No comments

Powered by Blogger.