শীত কালীন ফল

THE WINTER SEASON FRUIT | শীতের কালীন ফল |


A N I |
16 | NOVEMBER | 2019 |
THE WINTER SEASON FRUIT | শীতের কালীন ফল |

■ প্রারম্ভিকা ।
বাল‍্য কাল হতেই শীত মৌসুম আমার প্রচণ্ড ভালো লাগিতো । শীতের ফুল, শীতের ফল,শীতের সকালে কুয়াশা ভেজা স্নিগ্ধ ঘাস আমাকে মোহিত করিতো । সেই না মনের আবেগ আজো দোল খাইতেছে । নানা ধরনের বৈচিত্র্যতায় আর নতুনত্বে শীত অন্যান্য ঋতু থেকে আলাদা। ফ্যাশন থেকে শুরু করে তাই নিত্যদিনের খাবার তালিকাতেও এর উপস্থিতি চোখে পড়ে। শীতের এ সময়ে খাবার তালিকাতে আসে বেশ পরিবর্তন। খাবার তালিকার কেবল শাক সবজি নয় ফলের দিক থেকে শীতের এ সময়ে দেখা মেলে নানা ধরনের মুখরোচক ফলের। শীতের এ সময়ে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ফলের সমারোহ অনেকাংশে বেশি।

【1】 ডালিম |
ডালিম জনপ্রিয় ফলগুলোর একটি। ফলটি কারও কাছে বেদানা, কারও কাছে আনার নামে পরিচিত। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তিন ধরনের ডালিমের উল্লেখ পাওয়া যায়- মধুর ডালিম, কষায় ডালিম ও টক ডালিম। মধুর ডালিমের দানা বেশি লাল, রসালো ও উপকারি। আমাশয়, হৃদরোগ, লিভার বৃদ্ধি, অনিদ্রা, অজীর্ণ, রক্তপিত্ত, অরুচি, কৃমি, শ্বেতপ্রদহ, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় ডালিম উপকারি।

【2】 কুল |
শীতের জনপ্রিয় ফল কুল। সচরাচর দেশের সব জায়গাতেই দেখা যায়। কুল নানা জাতের হয়। যেমন- নারকেল কুল, আপেল কুল, বাউ কুল ইত্যাদি। তবে সব জাতের কুলই উপকারি। ফোঁড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, প্রদাহ, রক্ত আমাশয়, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা কুল, কুলের পাতা, ছাল সমাধান করতে পারে। হজমের জন্য এই ফল ভালো। এটি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট-সমৃদ্ধ। ফ্লু, হাঁপানি, কোলন ক্যানসার ও বাতের ব্যথা সারাতে বরই বেশ উপকারী। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি ও পথ্যবিদ শামছুন্নাহার নাহিদের তথ্য অনুযায়ী, বরইয়ে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ আছে নানা কিছু। রোগ প্রতিরোধে যেমন ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। বরই সবার জন্য ভালো হলেও ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য কিন্তু না। পাকা বরইয়ে চিনি থাকে, তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের পাকা বরই না খাওয়াই ভালো।

【3】 জলপাই |
শীত ঋতুর জনপ্রিয় ফল জলপাই। জলপাইয়ের পাতা ও ফল দুটোই উপকারি। ফলের রস থেকে তৈরি হয় তেল যার অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। টক জাতীয় এ ফলে রয়েছে ভিটামিন এ, সি ও ই। ভিটামিনগুলো দেহের রোগজীবাণু ধ্বংস করে, উচ্চরক্তচাপ কমায়, রক্তে চর্বি জমে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে, হৃদপিণ্ডের রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়, কোলনের পাকস্থলির ক্যান্সার দূর করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

【4】 আমলকী |
শীতের সুস্বাদু এবং উপকারি ফল আমলকী। আমলকীকে বলা হয় ভিটামিন ‘সি’-এর রাজা। আর এ ভিটামিন সি ত্বক সুরক্ষা, মাড়ি মজবুত এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

【5】 কমলা |
শীতের ফলের রাজা বলা হয় কমলাকে। গুণে ফলটির তুলনা নেই। বর্তমানে আমাদের দেশের পার্বত্য অঞ্চলে কিছু কিছু কমলার চাষ হচ্ছে। কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে । হৃদরোগীদের জন্য কমলা খুবই উপকারি। প্রতিদিন একটা কমলা খেলে অপুষ্টি দূর হবে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে।

【6】 সফেদা |
সফেদা দেখতে সুন্দর না হলেও নানা গুণে সমৃদ্ধ। সুগন্ধ আর মিষ্টতার দিক দিয়ে ফলটি অনেক এগিয়ে। অপুষ্টি, পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি, হার্টের দুর্বলতা ইত্যাদি রোগে পাকা সফেদা উপকারি। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সফেদার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

【7】 পেয়ারা |
শীতকালেও আপনি বাজারে পেয়ারা পাবেন। স্বাদ, পুষ্টিগুণ আর স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখলে পেয়ারা খেলে প্রচুর লাভ। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখা যেতে পারে। এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ‘সি’ ও লাইকোপেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি। পেয়ারার বিশেষ পাঁচটি গুণের মধ্যে রয়েছে এটি ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখের জন্য ভালো, পেটের জন্য উপকারী আর ক্যানসার প্রতিরোধী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়, যা কমলালেবুর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি। পেয়ারায় আছে ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। এতে আছে যথেষ্ট পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড ও নিকোট্রিন অ্যাসিড। বয়সের সঙ্গে জড়িত নানা রোগ, যেমন: স্মৃতিভ্রংশ (আলঝেইমার), চোখে ছানি, আরথ্রাইটিস বা হাঁটুব্যথা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

【8】 আপেল |
প্রবাদ আছে, যদি প্রতিদিন একটি আপেল খাও, ডাক্তার দূরে থাকবে। অর্থাত্‍ দিনে একটি আপেল খেলে সুস্থ থাকা যায়। যারা অল্পে রেগে যায়, অনিদ্রায় ভোগে তারা প্রতিদিন একটি লাল আপেল খোসাসহ খেলে সমস্যা চলে যাবে। শিশুর হজমশক্তি কমে গেলে লাল আপেল বেটে রস খাওয়ালে বদহজম ও হজমশক্তিহীনতা দূর হবে। আপেল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া দূর হয়। নিয়মিত আপেল খেলে কোলন ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।

◆ উপসংহার |
গ্রীষ্মকাল তার রসালো ফলের জন্য বেশি সমাদৃত। কিন্তু শীতকালই বা কম যায় কীসে? শীতকালেও পাওয়া যায় অনেক মজার মজার ফল। এসব ফলের যে শুধু স্বাদ চমত্‍কার তা নয়, রয়েছে অনেক গুণাগুণও ।

THANK YOU ALL.
A N I .

No comments

Powered by Blogger.