এই শীতে ত্বকের যত্ন নিন

Health care

এই শীতে ত্বকের যত্ন নিন

শীতের আগমেনর এই সময়টাতে ত্বক খুবই রুক্ষ, শুষ্ক ও মলিন হতে দেখা যায়। বাইরের ধুলাবালি, শীতল আবহাওয়া ও আর্দ্র পরিবেশের কারণে নারী-পুরুষ উভয়ের ত্বকের ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ধরণের সমস্যা যেমন ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া,ত্বক ও হাত-পা ফেটে যাওয়া, ত্বকে চুলকানি ইত্যাদি দেখা দেয়। বিশেষ করে যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের চেহারায় খসখসে ভাব চলে আসে ও চেহারার লাবণ্যতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই শীতের এই সময়টাতে ত্বকের সুস্বাস্হ্য রক্ষায় এবং ত্বককে সজীব ও মসৃণ রাখতে দরকার একটু বাড়তি যত্ন ও সর্তকতা।

■ ত্বকের যত্ন ।
শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বক স্বাভাবিক ভাবে আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। তাই এ সময়ে ময়েশ্চারাইজিং যুক্ত সাবান ব্যবহার করুন। রোজ গোসলের পর ও রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের খসখসে ভাব দূর হবে, ত্বক ফাটবেও না বরং ত্বক মসৃণ ও কোমল হয়ে উঠবে। বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন ক্রিম মুখ লাগিয়ে রোদে বের হবেন। এতে আপনার ত্বক বাইরের ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাবে ও বলিরেখার হাত থেকে রেহাই পাবে।

এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান, কোল্ড ক্রিম,ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ও লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে চেহারার সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে, ত্বক থাকবে সজীব ও সতেজ।

■ মধু ও পাকা কলা ।
মধু ও পাকা কলা একসাথে ব্লেন্ড করে ঘন পেস্ট তৈরী করে মুখে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন এবং ময়েশ্চারাইজ লাগান। নিয়মিত এটি ব্যবহারে ত্বক আর্দ্রতা ফিরে পাবে, হয়ে উঠবে নরম ও কোমল। দুধের সর কিংবা অন্যান্য প্যাকের সাথেও মধু ব্যবহার করতে পারবেন।

■ শসা ও টমেটো ।
১ টেবিল চামচ শসার রস ও ১ চা চামচ টমেটোর রস একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত মুখে ব্যবহার করুন। এটি শুষ্ক ত্বককে মসৃণ ও সুন্দর করে তুলবে। শসা চাকা চাকা করে কেটে চোখের উপরে লাগিয়ে রাখুন, চোখের নিচে কালো দাগ দূর হবে এবং ডার্ক সার্কেল চলে যাবে।

■ অলিভ অয়েল ।
সাধারণত সব ধরণের ত্বকের জন্য অলিভ অয়েল খুবই উপকারী। গোসলের আগে মুখে ও শরীরে অলিভ অয়েল লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর গোসল করে ফেলুন। এছাড়া অলিভ অয়েল ও মধু মিশিয়ে হালকা মিশ্রণ তৈরী করে মুখে লাগান। এতে আপনার মুখের মৃত কোষ উঠে যাবে।
শীতে বিশেষ করে ছেলেদের ত্বক হয় বেশি রুক্ষ ও খসখসে। ফলে ত্বক ফেটে যায়। বাইরের ধুলাবালি আর ত্বক তৈলাক্ত হওয়ায় অনেকেরই মুখে ব্রণ উঠে। এই সব সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজ ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এবং অয়েল কন্ট্রোল ফেসওয়াশ ব্যবহার করে ব্রণের সমস্যা দূর করতে পারেন।

■ হাত-পায়ের যত্ন ।
শীতে হাত-পা ফেটে যাওয়া অস্বাভাবিকের কিছু না। এ সময়ে হাত অমসৃণ ও খসখসে হয়ে থাকে, হাতের কনুই,পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। তাই হাত ও পায়ে গ্লিসারিন,পানি ও গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করলে ফাটা ভাব চলে যাবে ও মসৃণতা ভাব ফিরে আসবে। এছাড়া হাত ও পায়ে লোশন এবং বিভিন্ন Branded Winter Care পণ্য ব্যবহার করতে পারেন।
কারো কারো মুখমণ্ডলের ত্বক কোমল। কিন্তু দু’পায়ের তলা খসখসে। মাঝে মধ্যে পায়ের তলা দুটো ফুলে যায়, অবসন্ন লাগে এবং চুলকায়। কিভাবে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব?

-গরম পানির মধ্যে সামান্য সোডা বাই কার্বোনেট মিশিয়ে খসখসে পায়ের তলা দুটো তার মধ্যে ভিজিয়ে রাখতে পারেন। খসখসে অংশগুলো ও গোড়ালি ঝামাপাথর দিয়ে জোরে জোরে ঘষে পরিষ্কার করবেন। নাজুক অংশ যেমন আঙুলগুলো জোরে জোরে ঘষে পরিষ্কার করবেন একটা নাইলন ব্রাশ দিয়ে। তারপর একটা পরিষ্কার শুকনো তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা দুটো ভালো করে মুছবেন, এরপর পায়ের তলায় একটা ভালো ট্যালকম পাউডার ছিটিয়ে দেবেন। পায়ের তলা দুটোর প্রচুর ঘামার প্রবণতা থাকে, বিশেষ করে আপনি যদি জুতা ও মোজা পরেন। ওগুলো ত্বকের সাথে লেগে থাকে এবং ঘাম ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে। শুষ্ক ত্বকে সর্বদা কোল্ড ক্রিম মাখতে হবে। আপনার আঙুলের ফাঁকগুলোতে কিছু ডিওডোরান্ট ছড়িয়ে দিন। মোজাগুলোকে পরিষ্কার রাখবেন এবং ওগুলো প্রতিবার পরার পরে ধুয়ে দেবেন।
পায়ের ফোলার জন্য কার্যকর চিকিৎসা হলো পা দুটো লেবুর রস অথবা কর্পূর মিশ্রিত স্পিরিট দিয়ে মালিশ করা। যদি চুলকানি থাকে তাহলে ঘনঘন পা পরিষ্কার করবেন, ভালো করে পা শুকোবেন এবং পাউডার ছিটিয়ে দেবেন। যদি সমস্যা থেকে যায় তাহলে গোড়ালি এবং আঙুলগুলোতে গ্লিসারিন মাখবেন এবং আধঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলবেন। গোসলের আগে গোড়ালিতে মধু ঘষবেন।

■ ঠোঁটের যত্ন ।
শীত আসতে না আসতেই ঠোঁটের চামড়া ঊঠতে শুরু করে,ঠোঁট ফেটে যায় আবার অনেক সময় ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয়। এই শীতে ঠোঁট কে নরম, সতেজ ও কোমল রাখতে ভ্যাসলিন,গ্লিসারিন অথবা পেট্রোলিয়াম জেলী ব্যবহার করতে পারেন। এতে ঠোঁট নরম থাকবে।
কারো কারো সব সময় ঠোঁট শুষ্ক থাকে। ঠোঁট ফেটে যায়। কী করণীয়?
- শীতের শুষ্ক ও ঠাণ্ডা আবহাওয়ার প্রভাব শুধু শরীরের উপরই পড়ে না, ঠোঁটের উপরও পড়ে ভীষণভাবে। ফলে এ সময়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবারই ঠোঁট শুষ্ক থাকে এবং ঠোঁট ফাটতে দেখা যায়। অনেকের আবার শুধু শীতকালই নয়, সারাবছরে ঠোঁট শুষ্ক থাকে ও ঠোঁট ফাটে। এটা খুবই এক বিরক্তিকর সমস্যা।
ঠোঁটের শুষ্কতা ও ঠোঁট ফাটা মোকাবেলা করার জন্য ঠোঁট দুটোতে গ্লিসারিন মেখে হালকা ম্যাসাজ করতে হবে, এতে রক্তসঞ্চালন বাড়বে এবং মৃতকোষগুলো উঠে যেতে সাহায্য করবে। অতিরিক্ত গ্লিসারিন ভেজা কটন উল দিয়ে মুছে ফেলবেন। এবার দুই ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার যেমন ভ্যাসলিন খুব গাঢ় করে মাখবেন এবং দুই ঠোঁটে আগাগোড়া খুব দ্রুত আলতো করে আঙুল বুলাবেন। ঠোঁটের কোনা থেকে মাঝ পর্যন্ত দ্রুত এটা করবেন। এতে ঠোঁট কোমল থাকবে এবং ঠোঁট ফাটার সমস্যা দেখা দেবে না। একটা কথা মনে রাখতে হবে, তাহলো ঠোঁট কখনোই শুকনো রাখা যাবে না। ঠোঁট আবারও শুকিয়ে যাওয়ার আগেই গ্লিসারিন কিংবা ভ্যাসলিন মাখতে হবে। আর ঠোঁটের চামড়া কখনোই টেনে তুলবেন না।

শীতের মধ্যে বাইরে বেরোলে কিংবা রোদে বাইরে গেলে অবশ্যই ফাটা ঠোঁটে লিপ ব্যারিয়ার ক্রিম মেখে বেরোতে হবে। সূর্যরশ্মির কারণে ঠোঁট ফুলে যায়, ব্যথা হয় কিংবা ঠোঁটে জ্বালা পোড়া অবস্থার সৃষ্টি হয় ।

THANK YOU ALL .
A N I .

No comments

Powered by Blogger.