গুজব

THE RUMOUR | A STORY | MANY TRUTH|



A N I
17 SEPTEMBER 2019 THE RUMOUR | A STORY | MANY TRUTH|


■ THE RUMOUR | 

গুজব হল আমেরিকান ইংরেজিতে RUMOR বা ব্রিটিশ ইংরRUMOUR; অর্থ হল, জনসাধারনের সম্পর্কিত যেকোন বিষয়, ঘটনা বা ব্যক্তি নিয়ে মুখে মুখে প্রচারিত কোন বর্ণনা বা গল্প।
সামাজিক বিজ্ঞানের ভাষায়, গুজব হল এমন কোন বিবৃতি যার সত্যতা অল্প সময়ের মধ্যে অথবা কখনই নিশ্চত করা সম্ভব হয় না। অনেক পন্ডিতের মতে, গুজব হল প্রচারণার একটি উপসেট মাত্র ।সমাজবিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞান শাস্ত্রে গুজবের ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা পাওয়া যায়।
গুজব অনেক ক্ষেত্রে "ভুল তথ্য" এবং "অসঙ্গত তথ্য” এই দুই বোঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। "ভুল তথ্য" বলতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যকে বুঝায় এবং "অসঙ্গতি তথ্য” বলতে বুঝায় ইচছাকৃতভাবে ভ্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা।
রাজনীতিতে গুজব বরাবর একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে ইতিবাজক গুজবের পরিবর্তে নেতিবাচক গুজব সর্বদা অধিক কার্য়কর হতে দেখা গেছে।

■ সম্প্রতি কালের সবচেয়ে বড় গুজব "ছেলে ধরা" ।
বাংলাদেশের অন্যতম বড় নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে এমন একটি গুজব যে দেশের গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে কতটা ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে, তার একটি প্রমান বরগুনা শহর । শহরের কেন্দ্রে একটি কোচিং সেন্টারে তখন বিকেল পাঁচটা । বড় গেট পেরিয়ে কোচিং সেন্টার চত্বরে বেশ কিছু নারী-পুরুষ বসে আছেন । উদ্দেশ্য একটাই যে ছেলে ধরা থেকে নিজেদের সন্তানদের রক্ষা করা ।
নেত্রকোনায় এক ব্যক্তির ব্যাগে শিশুর কাটা মাথা পাওয়া গেছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মূলত এই ধারণা মানুষের মাঝে অনেকটা বদ্ধমূল হয়েছে যে 'কাটা মাথার' বিষয়টি কোন গুজব নয়।

কিন্তু এই আতঙ্ক কি কেবল শুধু শহর-কেন্দ্রীক?
প্রত্যন্ত গ্রামের অবস্থা ।
বরগুনা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে নলিবাজার নামের একটি জেলে অধ্যুষিত এলাকা। অনেকটা অবাক করা কান্ড যে সেখানে 'কাটা মাথা' গুজব বরং আরো জোরালো। এলাকায় অপরিচিত মানুষ দেখলেই সন্দেহ করছেন সবাই।

'কাটা মাথা' গুজব গ্রামাঞ্চলে এতোটাই ছড়িয়েছে যে বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি পর্যন্ত কমে গেছে।

একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মারজানা রহমান বললেন, "এইডা তো এখন সব জায়গায় ছড়াছড়ি চলে যে কল্লা কাডা, বাচ্চারা একটু ভয় পায় আসতে চায় না। এ রকম একটা প্রভাব পড়া স্বাভাবিক, সব জায়গায়।"
সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হলো, এমন গুজবও ছড়িয়েছে যে প্রতিটি স্কুল থেকে একটি করে শিশু চাওয়া হয়েছে। অনেকে জিজ্ঞেস করে যে আপনার স্কুলে কি এ রকম কোন তথ্য দিছে যে একটা বাচ্চা দেয়া লাগবে? আমরা বলি যে এ ধরণের কোন তথ্য নাই। এটা সম্পূর্ণই গুজব।"
কিন্তু শিক্ষকদের কথাও পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেন না অভিভাবকেরা।

মারজানা রহমান বলেন, "আসলে এতোই ছড়াছড়ি চলতেছে যে এইডা বললেও সহজে বিশ্বাস করতে চায় না। তারা বলে, সব জায়গায় কি এতো মিথ্যা কথা হয়?" অভাবনীয় বিষয় হচ্ছে, প্রত্যন্ত গ্রামেও এখন অনেক অভিভাবক শিশু সন্তানদের স্কুলে আনা-নেয়া করছেন। মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর মোল্লা নামে এক অভিভাবক বলেন, "এখন বাচ্চাদের সাথে যাওয়া লাগে এবং বাচ্চাদের স্কুল থেকে যাইয়্যা আনা লাগে। আমরা খুব আতঙ্কের ভিতরে আছি।"

■ গুজব কিভাবে ছড়িয়েছে
পুরুষেরা বলেছেন, গ্রামের হাট-বাজারে অনেকেই 'কাটা মাথা' প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেছেন, আর সেখান থেকেই তারা এটি শুনেছেন। অনেকে আবার লোকমুখে শুনেছেন যে দূরের কোন গ্রামে এক শিশু হারিয়ে গেছে। যদিও বিষয়টি তারা কখনো যাচাই করেননি, তবে এভাবেই গুজবের ডালপালা বিস্তৃত হয়েছে। নলিবাজার এলাকার বাসিন্দা মোঃ দুলাল মিয়া জানালেন, তিনি এলাকার সবার কাছে একই কথা শুনছেন। "বাজারে শুনছি, ফেসবুকে-টুকে না। খালি মানুষের মুহে-মুহে"। অন্যদিকে নারীদের অনেকেই বিষয়টি শুনেছেন হয়তো তাদের আত্নীয়-স্বজনের কাছে, নয়তো স্কুলের অন্য অভিভাবকদের কাছ থেকে।
"এইটা মানুষের মুখে-মুখে। যেমন স্কুলে আসছি, এক ভাবী বললো, এ রকম ছেলে ধরা বের হইছে। এ রকম কইরা শুনছি," বলছিলেন অভিভাবক জেসমিন আক্তার। সরকারের তরফ থেকে অবশ্য এখন তথ্য জানিয়ে দেয়া হচ্ছে যে পদ্মাসেতুতে মাথা লাগার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তবে গত এক সপ্তাহে ছেলেধরা আতঙ্কে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গণপিটুনিতে বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।


■ তথ‍্য ভিত্তিক গুজবের ব‍্যখ‍্যা । 
ডিপ ওয়েব, ডার্ক ওয়েব নিয়ে আমাদের অনেকের মনে একটা প্রচন্ড রকমের রহস্যমন্ডিত আগ্রহ আছে যার মূল হলো সেগুলা সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ভুল এবং অতিরঞ্জিত তথ্য । যেহেতু গুজব, ষড়যন্ত্রতত্ত্ব বা অতিরঞ্জিত তথ্যে মানুষের আগ্রহ সবসময়ই বেশি থাকে, তাই এই আগ্রহকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মূলধারার সংবাদপত্রগুলাও এই টপিকের উপর সত্য মিথ্যার মিশেলে খবর ছাপিয়েছে অগুনতি (১, ২, ৩) । ইন্টারনেট বা ইউটিউবে সার্চ দিলে মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত খবরের ভীড়ে আসল তথ্য পাওয়াটাই কঠিন হয়ে যায় । তাই, নিজের জানাশোনার মধ্যে যথাসম্ভব সঠিক তথ্য দেয়ার চেষ্টায় ইন্টারনেটের এই ব্যাপারটা নিয়ে কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো ।


Thank you all
A N I

No comments

Powered by Blogger.